আতঙ্ক! ট্রাম্পের শুল্ক থেকে বাঁচল ব্রিটেন, কতটা?

**যুক্তরাজ্য: ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের ধাক্কা সামলে নেওয়ার চেষ্টা**

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যুদ্ধের এক কঠিন পরিস্থিতিতে, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে বাঁচাতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। তবে কূটনীতির সফল প্রয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সরকার ক্ষতির পরিমাণ কমাতে সক্ষম হয়।

২০২০ সালের শুরুর দিকে, যখন ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, তখন যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা উদ্বেগের সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তাদের আশঙ্কা ছিল, এই পদক্ষেপ তাদের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

ব্রিটেনের কর্মকর্তারা ধারণা করেছিলেন, তাদের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হতে পারে, যা তাদের জিডিপি-তে ১ শতাংশ পর্যন্ত প্রভাব ফেলতে পারত।

যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেন এবং বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনা শুরু করেন।

যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে আলোচনার মূল বিষয় ছিল, কীভাবে শুল্কের বোঝা কমানো যায় এবং বাণিজ্য সম্পর্ককে স্থিতিশীল রাখা যায়।

আলোচনার ফলস্বরূপ, যুক্তরাজ্যের জন্য ১০ শতাংশ শুল্কের হার নির্ধারিত হয়, যা প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল তার থেকে অনেক কম ছিল।

এর ফলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিবিদরা কিছুটা স্বস্তি অনুভব করেন। যদিও চীনের মতো কিছু দেশের ওপর ট্রাম্প প্রশাসন ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছিল, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয় ছিল।

যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের নেতৃত্বাধীন একটি দল এই সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁরা বিভিন্ন কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি, যুক্তরাজ্য সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গেও শুল্কের প্রভাব নিয়ে আলোচনা শুরু করে। কারণ, শুল্কের কারণে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ইইউ’র ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা ছিল।

এই ঘটনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং শুল্ক নীতির গুরুত্ব আবারও স্পষ্ট হয়। বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়।

বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। কারণ, শুল্ক আরোপের ফলে তাদের রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে।

বাংলাদেশের মতো দেশগুলোও এই ধরনের বাণিজ্য নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ, আমাদের প্রধান রফতানি বাজারগুলোতে শুল্ক বৃদ্ধি পেলে, দেশের অর্থনীতিতে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

তাই, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি এবং বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *