যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে!

ইউক্রেনের ক্রিভি রিহ শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৮, যার মধ্যে ৯ জন শিশু।

শুক্রবার ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত ক্রিভি রিহ শহরে রাশিয়ার চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৯ জন শিশুও রয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এই খবর জানা গেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির শহরটিতে চালানো এই হামলাকে চলতি বছরের অন্যতম ভয়াবহ হামলা হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।

হামলার ফলে আবাসিক ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেখানে আগুন ধরে যায়। স্থানীয় গভর্নর টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে তিন মাস বয়সী একটি শিশুসহ ৩০ জনের বেশি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

জরুরি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, আহতদের সংখ্যা ৫০ জনের বেশি। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি উদ্ধার কাজ এখনো চলছে জানিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি মস্কোর উপর আরও চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “রাশিয়ার প্রতিশ্রুতির শেষ পরিণতি ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, বোমা অথবা গোলন্দাজ বাহিনী।”

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ক্রিভি রিহ-এ সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করা হয়েছে। তবে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী এই দাবিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে টেলিগ্রামে বলা হয়েছে, “ক্ষেপণাস্ত্রটি একটি খেলার মাঠ সংলগ্ন আবাসিক এলাকায় আঘাত হেনেছে।”

হামলার পর শহরের সামরিক প্রশাসক জানিয়েছেন, রুশ ড্রোনগুলো আবাসিক বাড়িগুলোতেও হামলা চালিয়েছে, যার ফলে চারটি স্থানে আগুন ধরে যায়।

এতে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন এবং আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন।

এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে “অন্তহীন আলোচনা”-র ফাঁদে পা দেবেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রাসেলসে ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যাচাই করছি যে রাশিয়ানরা শান্তি চায় কিনা।”

অন্যদিকে, ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার অগ্রগতি কার্যত থমকে যাওয়ায় ভ্লাদিমির পুতিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কথা বলার কোনো পরিকল্পনা নেই।

এছাড়াও, ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয় পক্ষই মার্কিন মধ্যস্থতায় হওয়া অস্ত্র বিরতি লঙ্ঘনের জন্য একে অপরের বিরুদ্ধে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলার অভিযোগ করেছে।

জেলেনস্কি জানান, শুক্রবার রাশিয়ান সেনারা ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনের একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কিয়েভ রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনায় ছয়বার হামলা চালিয়েছে।

শনিবার ভোর রাতের হামলায় ইউক্রেনীয় বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী রাশিয়ার ছোড়া ৯২টি ড্রোন-এর মধ্যে ৫১টি ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে।

কিয়েভ, ঝাইতোমির, সুমি এবং দিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলে ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

এছাড়াও, ইউরোপীয় সামরিক পরিকল্পনাকারীরা এক মাসের মধ্যে ইউক্রেনে বিদেশি সেনা মোতায়েন সংক্রান্ত বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

তিনি জানান, এই মিশনে অন্যান্য অনেক দেশও সহায়তা করবে এবং এর মাধ্যমে ইউক্রেনীয় ভূমি, সমুদ্র ও আকাশপথকে সুরক্ষিত করা হবে।

ভ্যাটিকানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তা বন্ধের উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *