ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক ঘোষণার ফলে বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতিতে এক বিরাট পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। শনিবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা শুরু করেছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বিভাগ জানিয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় অনুযায়ী সকাল থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এর ফলে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কলম্বিয়া, আর্জেন্টিনা, মিশর এবং সৌদি আরবের মতো দেশগুলি থেকে আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
আগামী বুধবার থেকে এই শুল্কের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আসা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ এবং চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্ক নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি বাঁচাতে নিরাপদ বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছেন, যার ফলস্বরূপ তেলের দামও কমে গেছে।
এছাড়াও, কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কের প্রভাব কমাতে ছাড় দেওয়ারও ঘোষণা করা হয়েছে। যেসব পণ্য জাহাজে বোঝাই করা হয়েছে, তাদের জন্য ৫ই মে পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে, এই সিদ্ধান্তের ফলে কিছু দেশ সুবিধা পেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ভিয়েতনামের কথা বলা যায়। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে অনেক মার্কিন সরবরাহ শৃঙ্খল এখন ভিয়েতনামে স্থানান্তরিত হচ্ছে।
কিন্তু নতুন শুল্ক নীতির কারণে ভিয়েতনামকেও ৪৬ শতাংশ শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে।
এছাড়াও, কিছু পণ্যের ওপর এই শুল্ক কার্যকর হবে না। এর মধ্যে রয়েছে অপরিশোধিত তেল, ঔষধ, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী।
তবে, ট্রাম্প প্রশাসন এই ছাড় পাওয়া কিছু খাতের ওপর ভবিষ্যতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় এক বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। এর ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
বিশ্ব অর্থনীতির ওপর এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কেমন হবে, তা এখন দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান