ভ্রমণকালে স্মৃতি ধরে রাখার জন্য ছবি তোলার বাইরেও একটি ভিন্নধর্মী উপায় হলো স্কেচ করা। ছবি তো আমরা তুলি, কিন্তু ভ্রমণের প্রতিটি মুহূর্তকে মনের ক্যানভাসে আরও গভীর ভাবে আঁকতে স্কেচিংয়ের জুড়ি নেই।
ক্যামেরার বদলে পেন্সিল হাতে ভ্রমণের এই নতুন ধারণা বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে।
ভ্রমণে ছবি তোলার পাশাপাশি স্কেচিংয়ের মাধ্যমে আপনি আপনার অভিজ্ঞতার গভীরতা বাড়াতে পারেন। এর মাধ্যমে চারপাশের পরিবেশকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়, যা ছবি তোলার মাধ্যমে সবসময় সম্ভব হয় না।
একটি স্কেচ তৈরি করতে সময় লাগে, ফলে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করা যায়, যা মনকে শান্ত করে। স্কেচিংয়ের সময় স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলারও সুযোগ তৈরি হয়, যা ভ্রমণের আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।
ধরুন, আপনি সুন্দরবনের কোনো দৃশ্য স্কেচ করছেন, তখন সেখানকার কোনো স্থানীয় গাইড বা মাঝির সঙ্গে কথা বলতে পারেন, তাঁদের কাছ থেকে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে জানতে পারেন।
অনেকের মনে হতে পারে, স্কেচিং তো কঠিন কাজ, সবাই তো আর শিল্পী নয়। কিন্তু আসল কথা হলো, ভালো স্কেচ করার জন্য শিল্পী হওয়ার প্রয়োজন নেই।
আপনার স্কেচ কতটা নিখুঁত, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনি আপনার অনুভূতি কতটা প্রকাশ করতে পারছেন। হয়তো আপনার আঁকা ছবিতে সবকিছু পারফেক্ট নাও হতে পারে, কিন্তু প্রতিটি রেখা আপনার ভ্রমণের গল্প বলবে।
ঢাকার পুরনো স্থাপত্যের স্কেচ করতে পারেন, যা হয়তো পরবর্তীতে আপনার কাছে অমূল্য স্মৃতি হয়ে থাকবে। অথবা গ্রামের কোনো মেঠো পথের দৃশ্য ফুটিয়ে তুলতে পারেন, যা আপনাকে প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে যাবে।
স্কেচিংয়ের জন্য খুব বেশি উপকরণের প্রয়োজন হয় না। একটি পেন্সিল, একটি স্কেচবুক আর সামান্য কিছু রং দিয়েই শুরু করা যেতে পারে।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের স্কেচবুক পাওয়া যায়, যেগুলোর দাম কয়েকশ’ টাকার মধ্যে। শুরুতে সাধারণ পেন্সিল ব্যবহার করতে পারেন, পরে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে ভালো মানের পেন্সিল ব্যবহার করতে পারেন।
আজকাল অনেক ভ্রমণকারী তাঁদের ভ্রমণের স্মৃতিকে ক্যামেরাবন্দী করার পরিবর্তে স্কেচবুকে ধরে রাখতে পছন্দ করেন। এটি তাঁদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে আরও গভীর করে তোলে।
স্কেচিংয়ের মাধ্যমে ভ্রমণের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করা যায়, যা ছবি তোলার মাধ্যমে সবসময় পাওয়া যায় না। তাই, পরবর্তী ভ্রমণে ছবি তোলার পাশাপাশি স্কেচিংয়ের চেষ্টা করতে পারেন।
হয়তো আপনার ভ্রমণের স্মৃতি আরও রঙিন হয়ে উঠবে!
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার