ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে দেরি করছে কিশোর-কিশোরীরা! বাবা-মায়েরা উদ্বিগ্ন কেন?

আজকালকার দিনে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে যেন একটু অন্যরকম প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই যেন একটু বেশি বয়সে নিজেদের স্বাধীনতা উপভোগ করতে চাইছে।

পশ্চিমা বিশ্বে, বিশেষ করে আমেরিকাতে, যেখানে তরুণ বয়সে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়াটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেখানেও দেখা যাচ্ছে এই প্রবণতা।

কিন্তু বাংলাদেশে পরিস্থিতিটা ভিন্ন, যেখানে গাড়ি চালানো বা লাইসেন্স পাওয়ার চলটা এখনো ততটা সাধারণ নয়, বিশেষ করে কিশোর বয়সীদের মধ্যে।

তবে, এই পরিবর্তনটা আমাদের সমাজের অন্য অনেক দিকে প্রভাব ফেলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক কিশোর-কিশোরী তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া এক থেকে দুই বছর পর্যন্ত পিছিয়ে দিচ্ছে।

এমনকি ৩০ শতাংশের বেশি কিশোর-কিশোরী দুই বছরের বেশি সময় ধরে এই কাজটি করছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর কারণ হতে পারে আধুনিক জীবনযাত্রার চাপ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং আরও কিছু বিষয়।

আসলে, উন্নত বিশ্বে এখন রাইড শেয়ারিং অ্যাপ-এর ব্যবহার অনেক বেড়েছে।

এর ফলে কিশোর-কিশোরীদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তা কমে গেছে।

তাছাড়া, পড়াশোনার চাপ তো আছেই। ভালো ফল করার জন্য তাদের অতিরিক্ত চেষ্টা করতে হয়, যা তাদের সময় ও শক্তির ওপর প্রভাব ফেলে।

বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ রাখার প্রবণতাও বেড়েছে, যার কারণে বাইরে ঘোরাঘুরি করার প্রয়োজনীয়তা কমে গেছে।

অর্থনৈতিক চাপও একটা বড় কারণ।

অনেক পরিবারে বাবা-মাকে বেশি সময় ধরে কাজ করতে হয়, ফলে সন্তানদের ড্রাইভিং শেখানোর মতো সময় তাদের হাতে থাকে না।

মানসিক স্বাস্থ্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

উদ্বেগের কারণে অনেক কিশোর-কিশোরী নতুন কিছু শুরু করতে ভয় পায়।

বিষণ্ণতা তাদের মধ্যে শক্তি ও মনোযোগের অভাব তৈরি করতে পারে, যার ফলে তারা সহজে কোনো কাজে মন দিতে পারে না।

তবে, দেরিতে স্বাধীনতা উপভোগ করার কিছু খারাপ দিকও আছে।

দেরিতে লাইসেন্স পাওয়া মানে হল, কৈশোরে যে স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধ তৈরি হওয়ার কথা, তা হয়তো দেরিতে শুরু হবে।

এর ফলে তাদের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতা এবং জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার ক্ষমতাও কিছুটা কম থাকতে পারে।

তাহলে, অভিভাবকদের কী করা উচিত?

প্রথমত, সন্তানদের সঙ্গে তাদের ভবিষ্যৎ এবং দায়িত্ববোধ নিয়ে আলোচনা করা উচিত।

তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও বিকাশের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

যদি মনে হয় কোনো সমস্যা আছে, তবে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

তাদের স্বাধীনতা উপভোগ করতে উৎসাহিত করুন, তবে সেই সঙ্গে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করুন।

তাদের পড়াশোনা, খেলাধুলা এবং অন্যান্য শখের প্রতি উৎসাহ দিন।

সবশেষে, মনে রাখতে হবে, প্রত্যেক শিশুর পরিস্থিতি আলাদা।

তাই তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সাহায্য করা উচিত। তাদের ভালো ভবিষ্যতের জন্য, তাদের সুস্থ মানসিক বিকাশের জন্য অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *