মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের নীতিমালার বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। শনিবার দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘হ্যান্ডস অফ’ সমাবেশে ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানানো হয়।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, এই বিক্ষোভের ঢেউ লেগেছে বিশ্বজুড়েও। বার্লিন, প্যারিস, লন্ডনসহ বিভিন্ন শহরে প্রবাসী আমেরিকান এবং স্থানীয় সমর্থকেরা এই বিক্ষোভে অংশ নেন।
বিক্ষোভকারীরা মূলত ট্রাম্প সরকারের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সরকারি কাঠামো সংস্কার এবং প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
তারা বিশেষ করে সরকারি বিভিন্ন পদে কর্মী ছাঁটাই এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক সুযোগ-সুবিধা কমানোর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। জানা গেছে, সরকারি দপ্তরগুলোতে সংস্কারের অংশ হিসেবে দুই লক্ষাধিক কর্মীর পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, এই সংস্কারের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগ (আইআরএস) এবং সামাজিক নিরাপত্তা প্রশাসনের কর্মীরা এর শিকার হচ্ছেন।
বিক্ষোভকারীরা মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তগুলো দেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।
ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত একটি বিশাল বিক্ষোভে প্রায় ২০ হাজার মানুষের সমাগম হয়। বিক্ষোভকারীরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার ব্যবহার করেন।
প্যারিসের রিপাবলিক স্কোয়ারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একদল বিক্ষোভকারী ‘স্বৈরাচার রুখো’, ‘আইনের শাসন চাই’ এবং ‘ফ্যাসিবাদ নয়, স্বাধীনতা চাই’ -এর মতো বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিক্ষোভের আয়োজকদের একজন, ‘ইনডিভিজিবল’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এই বিশাল বিক্ষোভের মাধ্যমে আমরা পরিষ্কার বার্তা দিতে চাই যে, আমরা আমাদের গণতন্ত্র, আমাদের সমাজ, আমাদের স্কুল এবং আমাদের বন্ধু ও প্রতিবেশীদের ওপর তাদের (ট্রাম্প প্রশাসন) হস্তক্ষেপ চাই না।”
তবে, হোয়াইট হাউস এই বিক্ষোভের সমালোচনা করে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপের পক্ষে সাফাই গেয়েছে।
হোয়াইট হাউসের সহকারী প্রেস সেক্রেটারি লিজ হিউস্টন এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক নিরাপত্তা, মেডিকেয়ার এবং মেডিকেড সুবিধাভোগীদের অধিকার রক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এদিকে, বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানেরও তীব্র নিন্দা জানান। এছাড়াও, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিক্ষোভের ওপর দমন-পীড়নের প্রতিবাদও জানানো হয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা