যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভ্যন্তরীণ নীতিমালার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত একটি বাজেট পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রায় ৭ ট্রিলিয়ন ডলার কর ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে।
এছাড়া, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা এবং সরকারি বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ কমানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাজেট পাশের এই ঘটনা দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বাজেট পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য হলো, ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে নেওয়া বিভিন্ন করছাড় বহাল রাখা। ডেমোক্র্যাটরা অবশ্য এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন।
তাদের অভিযোগ, এতে ধনী ব্যক্তিরা বেশি সুবিধা পাবে এবং দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সিনেটের বিরোধী দলনেতা এলিজাবেথ ওয়ারেন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই বাজেট দেশের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোকে দুর্বল করে দেবে।
বাজেট বিতর্কের সময় সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে শুল্ক নিয়ে। ট্রাম্প সরকারের আমদানি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে ব্যবসায়ীরা পড়েছেন উভয় সংকটে।
বিশেষ করে, বিভিন্ন বিদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ডেমোক্রেট নেতা চাক শুমার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্কনীতি একটি নির্বুদ্ধিতার পরিচয়।’
তিনি উল্লেখ করেন, এই শুল্কের কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।
বাজেট নিয়ে বিতর্কের সময় সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। মেডিকেয়ার, সোশ্যাল সিকিউরিটি, খাদ্য সহায়তা, এবং প্রবীণ নাগরিকদের জন্য পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচী রক্ষার জন্য ডেমোক্র্যাটরা প্রস্তাব পেশ করেন।
কিছু রিপাবলিকান সিনেটরও এই প্রস্তাবগুলোর পক্ষে সমর্থন জানান। তবে, বাজেট থেকে মেডিকেয়ারের বরাদ্দ কমানোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন সিনেটর সুসান কলিন্স।
এই বাজেট প্রস্তাবের ফলে দেশের ঋণের বোঝা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার।
রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পল এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে বলেন, বাজেট বাস্তবায়িত হলে আগামী ১০ বছরে ঋণের পরিমাণ আরও ৫ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়বে।
তবে, শুল্কের প্রভাবের কথা বিবেচনা করে সিনেটর বিল ক্যাসিডি এই বাজেট প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এই মুহূর্তে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়, যা দেশের অর্থনীতিতে আরও অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে।
এই বাজেট প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে এখনো আলোচনা চলছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর বাস্তবায়ন দেশের অর্থনীতি এবং সাধারণ মানুষের জীবনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।
বিশেষ করে, করছাড় এবং শুল্ক নীতির কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে পারে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস