হোয়াইট হাউজের উপদেষ্টাদের এড়িয়ে, ট্রাম্পের ওভালে লাউরা লুমা!

ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পরেই কি নিরাপত্তা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চরম ডানপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট লরা লুমারের বৈঠকের পরই নড়েচড়ে বসেছে দেশটির নিরাপত্তা বিভাগ। হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) পরিচালক এবং উপ-পরিচালকসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই ঘটনা ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে লুমারের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ইঙ্গিত দেয়, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

জানা গেছে, লুমােরের সঙ্গে ট্রাম্পের এই বৈঠকটি আকস্মিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের আগে লুমাের সরাসরি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এরপরই ট্রাম্প তাকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানান। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ওই বৈঠকে লুমাের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার অপসারণের জন্য ট্রাম্পের কাছে সুপারিশ করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এনএসএ-র গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

লুমার তার এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) লেখেন, “এটাকে বলা হয় ‘যাচাইকরণ’। এনএসএ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত আমেরিকান জনগণের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।” লুমারের এই মন্তব্যের মাধ্যমে ক্ষমতা কাঠামোয় তার প্রভাবের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বদের এভাবে গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রভাব বিস্তার নজিরবিহীন।

লুমার দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্পের অনুগত হিসেবে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্পের নীতি সমর্থন করে বক্তব্য রেখেছেন। এমনকি নির্বাচনে যারা ট্রাম্পের বিরোধিতা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে, হোয়াইট হাউসে তার এই প্রবেশ এবং কর্মকর্তাদের অপসারণের পেছনে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

লুমার অবশ্য তার এই বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি। তবে তিনি ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাটা সম্মানের। আমি তার এজেন্ডাকে সমর্থন করার জন্য কাজ চালিয়ে যাব।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, লুমারের এই ক্ষমতা বৃদ্ধি ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, অতীতেও লুমারের পরামর্শের ভিত্তিতে ট্রাম্প বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনকে নিয়ে লুমারের একটি অভিযোগের পর ট্রাম্প ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন।

তবে, হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বলছেন, লুমারের সঙ্গে বৈঠকটি ছিল নিছক একটি ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ। কর্মকর্তাদের অপসারণের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, কর্মকর্তাদের অপসারণের পেছনে লুমারের সুপারিশ ছিল অন্যতম প্রধান কারণ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তাদের অপসারণ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং সাইবার নিরাপত্তা ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে দুর্বল করতে পারে। একইসঙ্গে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *