ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কের কোপে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি, নতুন নীতি তৈরির পথে কেইর স্টারমার। যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জেরে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে লেবার পার্টির নেতা কেইর স্টারমার দেশটির অর্থনৈতিক নীতিতে পরিবর্তন আনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা যুক্তরাজ্যের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা গেছে, ট্রাম্প যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর ফলে বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
ব্রিটেনের প্রধান শেয়ার বাজার, এফটিএসই ১০০, গত সোমবারের তুলনায় ৭ শতাংশের বেশি কমেছে। ২০১৯ সালের মার্চে কোভিড অতিমারীর সময় বাজারের যে অবস্থা হয়েছিল, সেই সময়ের পর এটিই সবচেয়ে বড় পতন।
ব্রিটিশ বিলাসবহুল গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার (জেএলআর) জানিয়েছে, তারা এপ্রিল মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য পাঠানো স্থগিত করবে।
জেএলআর এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা আমাদের ব্যবসার অংশীদারদের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য শর্তগুলো নিয়ে কাজ করছি। স্বল্পমেয়াদে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে এপ্রিল মাসে পণ্য পাঠানো স্থগিত করাও রয়েছে।”
এই পরিস্থিতিতে কেইর স্টারমার কিভাবে বিশ্ব অর্থনীতির এই ধাক্কা মোকাবিলা করবেন, তা নিয়ে কাজ করছেন। তিনি শ্রমিক এবং জনসাধারণের স্বার্থ রক্ষার কথা বলছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হতে পারে।
অর্থনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্টারমারের এই পদক্ষেপ অর্থনৈতিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর বৃদ্ধি বা ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর মতো সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।
চীনের পক্ষ থেকেও ট্রাম্পের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। চীন, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির উপর ৩৪ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে যুক্তরাজ্য পরিস্থিতি বিবেচনা করছে।
শনিবার কেইর স্টারমার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা বিশ্ব অর্থনীতির নিরাপত্তা নিয়ে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান।
তাঁরা একমত হয়েছেন যে, বাণিজ্য যুদ্ধ কারো জন্যই ভালো ফল বয়ে আনবে না।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপের মোকাবিলায় শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত। কারণ, তিনি সম্ভবত শক্তি প্রদর্শনের ভাষাই বোঝেন।
যুক্তরাষ্ট্রেও ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে। ওয়াশিংটন ডিসি এবং অন্যান্য শহরে কয়েক লাখ মানুষ তাঁর নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন।
বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরোধিতা করছেন।
এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বিশ্ব বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির উপরও পড়তে পারে।
বাণিজ্য ঘাটতি, রপ্তানি কমে যাওয়া এবং বিনিয়োগের অভাবের মতো সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান