আমেরিকার বাজারে ভয়াবহ দুঃসংবাদ! পোশাকের দামে আগুন?

**মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক ও জুতার দাম বাড়তে পারে, উদ্বেগে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প**

যুক্তরাষ্ট্র সরকার যদি তাদের আমদানি শুল্কের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, তবে সেখানকার বাজারে পোশাক ও জুতার দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যেতে পারে। এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উপর।

সম্প্রতি বিভিন্ন সূত্রে এমনটাই জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক ও জুতা সরবরাহকারী প্রধান দেশগুলোর মধ্যে চীন, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া অন্যতম। মার্কিন সরকারের নতুন শুল্ক নীতির কারণে এই দেশগুলো থেকে আসা পণ্যের দাম বাড়বে, এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর ফলস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ ভোক্তাদের, বিশেষ করে সীমিত আয়ের পরিবারগুলোর জন্য পোশাক কেনা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

আমেরিকার পোশাক ও জুতা শিল্পের সংগঠনগুলোর মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রায় ৯৭ শতাংশ পোশাক ও জুতা আসে আমদানি করা পণ্য থেকে।

এর মধ্যে চীন থেকে আসা পণ্যের উপর অন্তত ৫৪ শতাংশ, ভিয়েতনাম থেকে ৪৬ শতাংশ, কম্বোডিয়া থেকে ৪৯ শতাংশ, বাংলাদেশ থেকে ৩৭ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা পণ্যের উপর ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই শুল্কের বোঝা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের উপরই চাপানো হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রভাবশালী জুতা প্রস্তুতকারক ও পরিবেশক সমিতির হিসাব অনুযায়ী, যদি এই শুল্ক বহাল থাকে, তবে বর্তমানে চীনে তৈরি একটি জুতা, যা এখন ৭৭ ডলারে বিক্রি হয়, তার দাম বেড়ে ১১৫ ডলারে পৌঁছতে পারে।

একইভাবে, ভিয়েতনামে তৈরি একজোড়া running shoes, যা এখন ১৫৫ ডলারে পাওয়া যায়, তার দাম ২২০ ডলারে গিয়ে ঠেকতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

কারণ, অনেক মার্কিন কোম্পানি তাদের পোশাকের জন্য বাংলাদেশের উপর নির্ভরশীল। শুল্ক বাড়লে তারা হয়তো অন্য কোনো দেশ থেকে পোশাক আমদানি করতে চাইবে, অথবা পোশাকের দাম বাড়িয়ে দেবে, যা তাদের বিক্রি কমিয়ে দিতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাকের দাম বৃদ্ধি পেলে সেখানকার খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা দেখা দেবে।

এর ফলে কিছু কোম্পানির ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। তবে, যাদের সরবরাহকারীদের সঙ্গে ভালো দর কষাকষির ক্ষমতা আছে, অথবা শক্তিশালী ব্র্যান্ড ভ্যালু রয়েছে, তারা হয়তো এই পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিতে পারবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতির কারণে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে কী ধরনের প্রভাব পড়বে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

তবে, সংশ্লিষ্ট মহল মনে করে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। রপ্তানি বাড়াতে এবং নতুন বাজার খুঁজতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে এই পরিবর্তনের ধাক্কা সামলানো যায়।

বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুতকারকদের নতুন শুল্কের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে এবং বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের কৌশল পরিবর্তন করতে হবে।

তথ্য সূত্র:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *