মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ সুদানের পাসপোর্টধারীদের ভিসা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং নতুন ভিসা প্রদানও বন্ধ করে দিয়েছে। দেশটির নাগরিকদের ফেরত নিতে রাজি না হওয়ায় ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ সুদান সরকার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সহযোগিতা না করায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রুবিও বলেন, “যে কোনো দেশকে অবশ্যই সময় মতো তাদের নাগরিকদের গ্রহণ করতে হবে, যখন অন্য কোনো দেশ তাদের ফেরত পাঠাতে চায়।” তিনি আরও যোগ করেন, “দক্ষিণ সুদান সহযোগিতা করলে আমরা এই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা করব।”
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়বে। ভিসা বাতিলের কারণে সেখানে বসবাস করা অনেক দক্ষিণ সুদানি নাগরিক এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি হারাবেন।
এর আগে, অনেক দক্ষিণ সুদানি নাগরিক ‘টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস’ (টিপিএস) এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন। এই বিশেষ সুবিধা তাদের যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে নিজ দেশে ফিরতে না পারার কারণে দেওয়া হয়েছিল।
তবে, ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা ফিরে আসার পর টিপিএস-এর সুবিধা বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
জানা গেছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৩৩ জন দক্ষিণ সুদানি নাগরিক টিপিএস প্রোগ্রামের অধীনে রয়েছেন এবং আরও ১৪০ জন এই সুবিধা পাওয়ার যোগ্য ছিলেন। অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
দক্ষিণ সুদানে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং গৃহযুদ্ধ নতুন করে শুরু হওয়ার আশঙ্কার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটল।
২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চলা গৃহযুদ্ধে দক্ষিণ সুদানে প্রায় চার লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। বর্তমানে, দেশটির রাজনৈতিক নেতারা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও জটিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একইসঙ্গে, এর মাধ্যমে অন্য দেশগুলোকেও একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, নাগরিকদের ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা না করলে তাদের বিরুদ্ধেও এমন ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান