স্নো হোয়াইট: সৌন্দর্যের মোহে বন্দী সমাজের আসল চিত্র!

সিনেমা জগৎ থেকে শুরু করে সমাজের আনাচে কানাচে, সৌন্দর্য এবং বার্ধক্য নিয়ে মানুষের ধারণা সবসময়ই আলোচনার বিষয়। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘স্নো হোয়াইট’ সিনেমাটি মুক্তির পর থেকেই নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

কেউ বলছেন, সিনেমার কাহিনীর মধ্যে আধুনিকতার ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আবার কারো কারো মতে, পরিচিত গল্পের মোড়কে নতুন কিছু পরিবেশন করার নামে অনেক কিছুই যেন তালগোল পাকিয়ে ফেলা হয়েছে।

এই সিনেমার প্রধান একটি বিষয় হলো, নারীর সৌন্দর্য এবং বার্ধক্য নিয়ে সমাজের প্রচলিত ধারণা। গল্পে, রাণী তার সৌন্দর্যের মোহে এতটাই আচ্ছন্ন যে, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে সবচেয়ে সুন্দরী প্রমাণ করতে চান।

অন্যদিকে, স্নো হোয়াইটের সৌন্দর্য যেন এক নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় রানীর কাছে। সমাজের এই রূপচর্চা এবং বার্ধক্য নিয়ে বিদ্যমান ধারণাগুলোকেই যেন নতুন করে প্রশ্ন করা হয়েছে এই সিনেমায়।

সিনেমাটি মুক্তির আগে থেকেই বেশ কিছু বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা রাচেল জেগলারকে নিয়ে অনেকে আপত্তি তুলেছিলেন।

কারণ, তাঁর গায়ের রং শ্বেতাঙ্গদের মতো নয়। এছাড়াও, সিনেমার কাহিনীর কিছু পরিবর্তন নিয়েও অনেকে দ্বিমত পোষণ করেছেন।

ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানানোয়, খলনায়িকার চরিত্রে অভিনয় করা গ্যাল গ্যাডোটকেও অনেকে বয়কট করার ডাক দিয়েছেন।

আলোচনা সমালোচনার বাইরে, ‘স্নো হোয়াইট’ আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরে। তা হলো, সৌন্দর্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণ এবং বার্ধক্যকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা।

সমাজের এই দিকটি নারী ও পুরুষ উভয়ের উপরেই গভীর প্রভাব ফেলে। সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা চলে, যা কখনো কখনো স্বাস্থ্যকর হয় না।

এই সিনেমার মাধ্যমে, নির্মাতারা সম্ভবত দর্শকদের মনে এই প্রশ্নটি জাগাতে চেয়েছেন, সৌন্দর্য আসলে কিসের মধ্যে? বাইরের রূপ নাকি ভেতরের গুণ? বর্তমান সমাজে যেখানে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা প্রতিনিয়ত বদলায়, সেখানে এই সিনেমাটি দর্শকদের নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *