মার্চ মাসের শেষে মিয়ানমারে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৩,৪৭০ জনে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল দেশটির মধ্যাঞ্চলে, যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সাগাইং এবং মান্দালয় শহর। সেখানকার ত্রাণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, কারণ এখন শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি।
ভূমিকম্পের পরে বিপর্যস্ত মানুষগুলো খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। বৃষ্টি তাদের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে, অপ্রত্যাশিত বৃষ্টি এবং তীব্র গরমের কারণে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কলেরা সহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব হতে পারে। মান্দালয়ে বর্তমানে তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে রয়েছে।
ভূমিকম্পে শুধু মানুষ নয়, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে অবকাঠামোরও। হাজার হাজার ঘরবাড়ি, স্কুল, মন্দির, হাসপাতাল এবং সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভূমিকম্পের কারণে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ সরবরাহ এখনো কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই ভূমিকম্প মিয়ানমারের বিদ্যমান মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে এরই মধ্যে কয়েক মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং প্রায় ২ কোটি মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
সামরিক শাসনের অধীনে থাকা দেশটির সরকার ত্রাণ বিতরণে কিছু ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
ভূমিকম্পের পর প্রতিবেশী দেশগুলো যেমন চীন, ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ত্রাণ ও উদ্ধারকর্মী পাঠিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তবে, দেশটির বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রমে কিছুটা প্রভাব পড়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়াও, ভূমিকম্পের কারণে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দেশটির রাজধানী ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে।
এখনো ৭৭ জন নিখোঁজ রয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা