লে পেনের লড়াই: সমর্থকদের সামনেও হার মানতে নারাজ, কিন্তু…

ফ্রান্সের রাজনৈতিক অঙ্গনে সম্প্রতি আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ন্যাশনাল র‍্যালি (RN) পার্টির নেত্রী মারিন লে পেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) তহবিল আত্মসাৎ করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

এই ঘটনায় তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে এবং কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানা করা হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে লে পেন আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের তহবিল ব্যবহারের অভিযোগে প্যারিসের একটি আদালত লে পেনকে দোষী সাব্যস্ত করে। আদালত তাকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়, যার মধ্যে ২ বছর স্থগিত করা হয়েছে এবং তাকে গৃহবন্দী থাকতে হবে।

এছাড়াও, ১ লক্ষ ইউরোর জরিমানা করা হয়েছে। অভিযোগ ছিল, লে পেন ২০০৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সময়ে তার দলের কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য ইইউ-এর ৪.৫ মিলিয়নের বেশি ইউরো তহবিল ব্যবহার করেছেন। এই কর্মীদের তিনি মিথ্যাভাবে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যের সহকারী হিসেবে দেখিয়েছিলেন।

এই রায়ের পর লে পেন এক প্রতিক্রিয়ায় একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “এটা কোনো বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত নয়, বরং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।”

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে তার সমর্থকরা প্যারিসের ভবান স্কোয়ারে সমবেত হয়েছিলেন। যদিও গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, প্রত্যাশা অনুযায়ী বেশি সংখ্যক মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেয়নি।

অন্যদিকে, বামপন্থী দলগুলো লে পেনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পাল্টা বিক্ষোভ করে। তাদের ব্যানারে লেখা ছিল, “চরম ডানপন্থীদের পার পেতে দেওয়া হবে না।”

উল্লেখ, মারিন লে পেন আগামী ২০২৭ সালের ফরাসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী ছিলেন।

এই রায় লে পেনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কোনো সুযোগ নেই।

এই পরিস্থিতিতে লে পেনের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্যতা তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই রায়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ অনেকে এর সমালোচনা করেছেন।

ট্রাম্প এই রায়কে ‘witch hunt’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং লে পেনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তবে, ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রুর মতো কেউ কেউ এই রায়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

লে পেন জানিয়েছেন, তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। প্যারিস আপিল আদালত সম্ভবত ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।

যদি তিনি আপিলে জয়ী হন, তাহলে ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *