ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে উদ্বেগ, বাজারের অস্থিরতা।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দেখা দিয়েছে চরম অস্থিরতা, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, সব দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এছাড়া, প্রায় ৬০টি দেশের পণ্যের ওপর আরও বেশি শুল্ক বসানো হবে। গত শনিবার থেকে এই শুল্ক কার্যকর হয়েছে। অন্যদিকে, বুধবার থেকে বিশেষ হারে শুল্ক কার্যকর করার কথা রয়েছে।
শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর বিভিন্ন দেশ শুল্ক কমানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছে। এরই মধ্যে ৫০টির বেশি দেশ শুল্ক কমানোর বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, শুল্ক আলোচনা করার সুযোগ আছে, আবার কেউ বলছেন, এটি আলোচনার বিষয় নয়।
হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা পিটার নাভারো জানান, এটি কোনো আলোচনার বিষয় নয়, বরং বাণিজ্য ঘাটতির কারণে এটি একটি জরুরি অবস্থা। তিনি আরও বলেন, অন্য দেশগুলোর উচিত তাদের কারেন্সি ম্যানিপুলেশন এবং ডাম্পিং বন্ধ করা।
অন্যদিকে, বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুডনিক সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, শুল্ক বহাল থাকবে এবং এটি পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে। তবে, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
শেয়ারবাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। গত কয়েক দিনে ডাউ জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সূচক ১০ শতাংশের বেশি এবং নাসডাক কম্পোজিট ২০ শতাংশের বেশি কমেছে। বিশেষজ্ঞরা বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন।
অন্যদিকে, শুল্ক নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, যেসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে, তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করা হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্যসূত্র: CNN