ইউক্রেন যুদ্ধ: শান্তি স্থাপনে রাশিয়ার অনীহা, কড়া পদক্ষেপের আহ্বান ম্যাক্রনের।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন রবিবার রাশিয়ার প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে যদি তারা রাজি না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সম্প্রতি, রাশিয়ার একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ভলোদিমির জেলেনস্কির শহর ক্রিভি রিহ-এ শিশুসহ ২০ জন নিহত হয়।
ম্যাক্রন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে গেলেও রাশিয়া এখনো ‘শিশু ও বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা’ করছে।
তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, “ক্রিভি রিহ-এ গত ৪ এপ্রিলের হামলাসহ রাশিয়ার চালানো রক্তাক্ত হামলায় নিহত শিশু ও বেসামরিক নাগরিকদের প্রতি আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি।
অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।
রাশিয়া যদি সময়ক্ষেপণ করে এবং শান্তি ফিরিয়ে আনতে অস্বীকার করে, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
ম্যাক্রন আরও বলেন, ইউক্রেন এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছে এবং ইউরোপীয় দেশগুলোও শান্তি ফেরাতে কাজ করছে।
কিন্তু রাশিয়া বেসামরিক নাগরিকদের কোনো তোয়াক্কা না করে যুদ্ধের তীব্রতা বাড়াচ্ছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া কৃষ্ণ সাগর থেকে হামলা চালাচ্ছে, যার কারণে তারা শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হচ্ছে না।
জেলেনস্কি মনে করেন, রাশিয়া তাদের শহর ও বন্দরগুলোতে হামলা চালানোর ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছে।
তিনি আরও যোগ করেন, সমুদ্রপথে যুদ্ধবিরতি সামগ্রিক নিরাপত্তা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জেলেনস্কি ইঙ্গিত দেন যে, ভ্লাদিমির পুতিন সম্ভবত যুদ্ধ বন্ধ করতে চান না।
তিনি যেকোনো মুহূর্তে আরও ভয়াবহ শক্তি নিয়ে পুনরায় যুদ্ধ শুরু করার পথ খুঁজছেন।
রবিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানান, রাশিয়া তাদের বিমান হামলা আরও বাড়িয়েছে।
এর আগে, রাশিয়া দেশটির ওপর ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়, যাতে দুজন নিহত হয়।
জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়ার ওপর চাপ এখনো যথেষ্ট নয়।
এদিকে, জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
এই কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পেত্রো কোতিন জানিয়েছেন, রাশিয়া যদি এই কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করার চেষ্টা করে, তাহলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনেক সমস্যা দেখা দেবে।
তিনি আরও জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহ, কর্মী এবং শীতলীকরণ পানির অভাবের মতো বিষয়গুলো সমাধানে দুই বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক কেন্দ্র জাপোরিঝিয়ার ভবিষ্যৎ, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে যেকোনো আলোচনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান