আতঙ্কে বিশ্ব! সাহায্য কাটছাঁটে ‘মহামারী’ রূপ নিতে পারে মাতৃমৃত্যু!

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সতর্ক করে জানিয়েছে, ধনী দেশগুলোর সহায়তা কমানোর ফলে মাতৃমৃত্যুর হার আবারও বাড়তে পারে, যা কোভিড-১৯ মহামারীর মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোতে, গর্ভবতী মায়েরা স্বাস্থ্যসেবার অভাবে মারাত্মক ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন।

২০০০ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে মাতৃমৃত্যু প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছিল। কিন্তু ২০১৬ সালের পর থেকে এই উন্নতি কমে গেছে। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার নারীর মৃত্যু হয়েছে গর্ভধারণ ও প্রসবকালীন জটিলতার কারণে।

জাতিসংঘের সহকারী মহাপরিচালক ড. ব্রুস অ্যাইলওয়ার্ডের মতে, সহায়তা হ্রাসের ফলে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এর ফল হবে ভয়াবহ। তিনি বলেন, “কোভিডের সময় আমরা দেখেছি স্বাস্থ্যখাতে কতটা সংকট তৈরি হয়েছিল, বর্তমানে অর্থায়নের ক্ষেত্রেও তেমনটাই হতে চলেছে।”

অনেক দেশ এখনো বিকল্প অর্থায়ন এবং স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থা করতে পারেনি, যার ফলে জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, দরিদ্র দেশগুলোতে প্রতি ১ লাখ জীবিত জন্মে মাতৃমৃত্যুর হার ৩৪৬ জন, যেখানে উন্নত দেশগুলোতে এই হার মাত্র ১০ জন। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে মায়েরা প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বর্তমানে সংঘাতপূর্ণ ও দুর্বল দেশগুলোতে বিশ্বের ৬১ শতাংশ মাতৃমৃত্যু হয়, যেখানে জীবিত জন্ম হয় মাত্র ২৫ শতাংশ।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা, ইউনিসেফ-এর পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যখাতে বৈশ্বিক সহায়তা হ্রাস গর্ভবতী নারীদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে, বিশেষ করে দুর্বল দেশগুলোতে। তিনি জরুরি ভিত্তিতে ধাত্রী, নার্স এবং কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে প্রত্যেক মা ও শিশুর ভালোভাবে বাঁচার সুযোগ থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি ১ লাখ জীবিত জন্মে মাতৃমৃত্যুর হার ৭০-এর নিচে নামিয়ে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা পূরণ করতে হলে বর্তমানের চেয়ে ১০ গুণ দ্রুতগতিতে কাজ করতে হবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *