ভিসা বাতিল: দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের জন্য কি অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর ভবিষ্যৎ?

যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করেছে, যার ফলে দেশটিতে আবারও গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ওয়াশিংটন জানিয়েছে, দক্ষিণ সুদানের সরকার তাদের নাগরিকদের দ্রুত ফিরিয়ে নিতে রাজি না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

খবরটি এমন এক সময়ে এলো, যখন দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে উঠেছে এবং মানবিক সংকট গভীর হচ্ছে।

২০১১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর দক্ষিণ সুদানকে একসময় স্বাগত জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই, দেশটির সরকার পরিচালনায় ব্যর্থতা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে।

২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট সালভা কির ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রিক মাচারের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, যাতে কয়েক লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে চলা এই সংঘাতের পর ২০১৮ সালে একটি শান্তি চুক্তি হয়, কিন্তু সেটি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।

বর্তমানে, মাচারকে আটক করা হয়েছে এবং তাঁর রাজনৈতিক মিত্রদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর ফলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ ফের শুরু হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, পরিস্থিতি ২০১৪ ও ২০১৬ সালের গৃহযুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়, যেখানে প্রায় চার লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে অনেক পশ্চিমা দেশ তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে, আবার যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশ তাদের দূতাবাসের কর্মীদের সংখ্যা কমিয়েছে।

দক্ষিণ সুদানের সরকার মূলত তেল উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল।

কিন্তু দুর্নীতির কারণে, সাধারণ মানুষের কাছে উন্নয়নের সুফল সেভাবে পৌঁছায়নি।

সরকারি কর্মচারীরাও নিয়মিত বেতন পান না।

প্রতিবেশী সুদানে চলমান সংঘাতের কারণে দক্ষিণ সুদানের তেল রপ্তানিতেও প্রভাব পড়েছে।

এছাড়াও, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।

স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাত দুর্বল হওয়ায় মানবিক সংকট আরও বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে, দক্ষিণ সুদানের নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে না এবং যারা বর্তমানে সেখানে রয়েছেন, তাঁদেরও বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ সুদান সরকার সহযোগিতা করলে, ভিসা বাতিলের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *