ভুটানের আকাশে ওড়া: বিশ্বের অন্যতম কঠিন বিমানবন্দরে অবতরণ
ভুটান, যা ‘বজ্র ড্রাগনের দেশ’ নামে পরিচিত, তার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই রাজ্যের একটি বিশেষ আকর্ষণ হলো পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (PBH)। এই বিমানবন্দরে অবতরণ করাটা এতটাই কঠিন যে সারা বিশ্বে মাত্র ৫০ জন পাইলট এই কাজটি করতে পারেন।
পারো বিমানবন্দরের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এর ভৌগোলিক অবস্থান। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭,৩৮২ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই বিমানবন্দরটি দুটি বিশাল পর্বতের মাঝে অবস্থিত। রানওয়েটি ৭,৪৩১ ফুট লম্বা, যা বিমান অবতরণের জন্য যথেষ্ট সংক্ষিপ্ত। পাইলটদের এখানে অবতরণের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হয় এবং রাডার ব্যবহার করা যায় না। আবহাওয়ার পরিবর্তন, বিশেষ করে শক্তিশালী বাতাস এবং অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিপাতের কারণে এখানে বিমান চালানো আরও কঠিন হয়ে পড়ে। জুন থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে বর্ষাকালে প্রায়ই এখানে বজ্রঝড় এবং শিলাবৃষ্টি হয়।
এই কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও, ভুটানের জাতীয় বিমান সংস্থা ড্রুক এয়ার (Druk Air) তাদের পাইলটদের উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আসছে। ক্যাপ্টেন চিমি দর্জি, যিনি ২৫ বছর ধরে ড্রুক এয়ারে কাজ করছেন এবং বর্তমানে পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেন, তিনি বলেন, “পারোতে বিমান চালানো কঠিন, তবে বিপজ্জনক নয়।” তিনি আরও যোগ করেন, “এখানে স্থানীয় দক্ষতা এবং অঞ্চলের সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
ভুটান সরকার তাদের বিমান পরিবহন খাতে উন্নতি আনতে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে, তারা গেলিফু (Gelephu) শহরে একটি নতুন বিমানবন্দর তৈরি করছে। গেলিফু শহরটি অপেক্ষাকৃত সমতল হওয়ায় এখানে দীর্ঘ রানওয়ে তৈরি করা সম্ভব, যা বোয়িং-এর মতো বড় আকারের বিমান অবতরণের জন্য সহায়ক হবে।
ভুটানের এই পদক্ষেপগুলি দেশটির পর্যটন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে, এই অঞ্চলে বিমান চলাচলের আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং ভুটানের আকাশ পথে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আরও সহজ হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন