আতঙ্কে এশীয় শেয়ার বাজার! ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের বলি, বাড়ছে ক্ষতির আশঙ্কা!

আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে এশীয় শেয়ারবাজারগুলোতে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে।

জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক প্রায় ৮ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

সোমবার (তারিখ উল্লেখ করতে হবে) এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ারবাজারে এই দরপতনের চিত্র দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধি এবং চীনের পাল্টা পদক্ষেপের কারণে ওয়াল স্ট্রিটে বড় ধরনের দরপতন হয়, যার প্রভাব এসে পরে এশীয় বাজারে।

টোকিওর নিক্কেই ২২৫ সূচক এক পর্যায়ে প্রায় ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়, পরে অবশ্য কিছুটা স্থিতিশীল হয়ে ৬ শতাংশে দাঁড়ায়। এছাড়া হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ৯.৪ শতাংশ এবং সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স ৬.২ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দরপতনের মূল কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যেকার বাণিজ্য যুদ্ধ। উভয় দেশই একে অপরের পণ্যের ওপর শুল্কের বোঝা বাড়াচ্ছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ।

বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা আসার আশঙ্কাও বাড়ছে।

শেয়ারবাজারের এই অস্থিরতার প্রভাব শুধু জাপানেই সীমাবদ্ধ নেই। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচক ৪.১ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার এসএন্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক ৩.৮ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।

এছাড়া, প্রযুক্তি খাতের জায়ান্ট আলিবাবা গ্রুপের শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ এবং টেনসেন্ট হোল্ডিংসের শেয়ারের দাম ৯.৪ শতাংশ কমেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের আরও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, বাণিজ্য যুদ্ধের দ্রুত কোনো সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা কম।

ফলে, আগামী দিনগুলোতে শেয়ারবাজারে আরও উত্থান-পতন দেখা যেতে পারে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, বাণিজ্য যুদ্ধের পুরো প্রভাব এখনো শেয়ারবাজারে প্রতিফলিত হয়নি।

আন্তর্জাতিক বাজারের এই অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং রেমিট্যান্স প্রবাহের ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে।

তবে, এই মুহূর্তে এর সরাসরি প্রভাব সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমিয়ে অর্থনীতির ওপর শুল্কের প্রভাব কমাতে পারে। কিন্তু ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেছেন, শুল্কের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়লে সুদের হার কমানো কঠিন হয়ে পড়বে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন, শুল্কের কারণে হয়তো কিছু ক্ষতি হবে, তবে এর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যগুলো, যেমন—যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি উৎপাদনমুখী শিল্প ফিরিয়ে আনা—তা মূল্যবান।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *