যুক্তরাষ্ট্রে বন্যা: ভয়ঙ্কর রূপ, শহর জলমগ্ন, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা!

**যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল বর্ষণে বন্যা, শহরগুলোতে জলমগ্ন, বাস্তুহারা হাজার হাজার মানুষ**

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চল এবং মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক দিনের অবিরাম ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

কেন্টাকি ও টেনেসিসহ বিভিন্ন রাজ্যে নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে, ফলে শহরগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। টেক্সাস থেকে ওহাইও পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কেন্টাকি রাজ্যের রাজধানী ফ্রাঙ্কফোর্টে, কেন্টাকি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানকার একটি রেস্টুরেন্টের জেনারেল ম্যানেজার ওয়েন্ডি কুইর জানান, “আমার জীবনে, অর্থাৎ ৫২ বছরে, এমন ভয়াবহ বন্যা দেখিনি।

শহরটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার নদীর পানি প্রায় ৪৯ ফুটের (প্রায় ১৫ মিটার) উপরে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা রেকর্ড সৃষ্টি করতে পারে।

বন্যার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে কেন্টাকি, টেনিসি, আরকানসাস, মিসৌরি, ওহাইও এবং টেক্সাস। জরুরি বিভাগের কর্মীরা কেন্টাকির ফালমাউথ এবং বাটলার শহর থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছেন।

কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় ৩০ বছর আগে, এখানে লিকিং নদীর পানি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল, যার ফলে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল এবং এক হাজার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

বৃষ্টির কারণে আরকানসাসের জোন্সবারোতে একদিনে প্রায় ৫.০৬ ইঞ্চি (প্রায় ১৩ সেন্টিমিটার) বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা এপ্রিল মাসের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। টেনেসির মেমফিসে বুধবার থেকে রবিবার পর্যন্ত ১৪ ইঞ্চি (প্রায় ৩৫ সেন্টিমিটার) বৃষ্টিপাত হয়েছে।

টেনেসির রিভস শহরটি প্রায় জলের নিচে চলে গেছে। সেখানকার ডোমানিক স্কট নামের এক ব্যক্তি জানান, তার বাবার সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে তিনি যখন সেখানে যান, তখন দেখেন তার বাবার বাড়ির দরজায় পানি উঠে গেছে।

বন্যার কারণে অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। ডায়ারসবার্গে, টেনেসির একটি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ৭৭ বছর বয়সী জর্জ ম্যানস জানান, টর্নেডোর সতর্কবার্তা শোনার পর তিনি তার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসেন।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা (National Weather Service) জানিয়েছে, এই ভয়াবহ আবহাওয়ার কারণ হলো উষ্ণ তাপমাত্রা, অস্থির বায়ু এবং উপসাগর থেকে আসা প্রচুর জলীয় বাষ্প।

তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *