মাঠে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত! মাস্টার্সে লি’র সেই ‘ভূমিকম্প’!

আর্টিকেল লেখার নির্দেশনা অনুযায়ী, এখানে একটি নতুন বাংলা সংবাদ নিবন্ধ:

**৫০ বছর আগে: বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াকু এক গল্ফারের গল্প**

১৯৭৫ সালের ১০ই এপ্রিল, আমেরিকার একটি গল্ফ টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছিল। সেই দিন, লি এলডার নামের একজন কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড় প্রথমবার ‘মাস্টার্স টুর্নামেন্ট’-এ অংশ নিয়েছিলেন। বর্ণবাদের বিভেদ ভেঙে এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি ক্রীড়া জগতে এক বিরাট পরিবর্তন এনেছিল।

লি এলডারের এই সাফল্যের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে, সেই সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী, কার্ল জ্যাকসন-এর কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বহু বছর ধরে ‘অগাস্টা ন্যাশনাল’ নামক গল্ফ কোর্সে ক্যাডি হিসেবে কাজ করা জ্যাকসন, এলডারের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। তিনি জানান, এলডারের এই অংশগ্রহণের বিষয়ে অনেকের মনে দ্বিধা ছিল, কারণ সে সময়ে সমাজের কিছু অংশের মানুষ বর্ণবাদের ধারণাকে সমর্থন করত। কিন্তু এলডারের এই সাহসী পদক্ষেপ গল্ফ খেলার জগৎকে নতুন পথে চালিত করে।

কার্ল জ্যাকসন আরও বলেন, “সেদিনটা গল্ফের জন্য সত্যিই একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন ছিল। এলডার তাঁর নিজের প্রতিভার জোরেই এখানে এসেছিলেন। তাঁর মধ্যে আমরা সবাই অনেক প্রত্যাশা রেখেছিলাম।” এলডারের ব্যক্তিত্বের প্রশংসা করে তিনি যোগ করেন, “লি এলডার সবসময় হাসিখুশি থাকতেন। যারা তাঁর সাথে কাজ করতেন, তাঁরা সবাই তাঁর ভালো দিকগুলো নিয়ে কথা বলতেন। আমি তাঁর সম্পর্কে কোনো খারাপ কথা শুনিনি।”

লি এলডার-এর জীবন ছিল সংগ্রামের। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারানো এলডার, প্রতিকূলতা সত্ত্বেও গল্ফ খেলার প্রতি নিজের ভালোবাসা টিকিয়ে রেখেছিলেন। তিনি শুধু একজন খেলোয়াড় ছিলেন না, বরং সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিলেন কীভাবে বাধা পেরিয়ে সফল হওয়া যায়। তাঁর এই লড়াই অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

১৯৭৫ সালের মাস্টার্স টুর্নামেন্টে যদিও এলডার তেমন ভালো ফল করতে পারেননি, তবে তাঁর অংশগ্রহণের গুরুত্ব কোনো অংশে কম ছিল না। বরং, তাঁর এই উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, খেলাধুলায় সবার জন্য সমান সুযোগ থাকা উচিত। পরবর্তীতে, এলডারকে সম্মানিত করতে ‘অগাস্টা ন্যাশনাল’ কর্তৃপক্ষ তাঁর নামে বৃত্তি চালু করে। এমনকি, ২০২১ সালে তাঁকে সম্মানসূচক ‘স্টার্টার’-এর মর্যাদা দেওয়া হয়।

এই বছর মাস্টার্স টুর্নামেন্ট আবার শুরু হতে যাচ্ছে। তবে, এখনো পর্যন্ত কার্ল জ্যাকসনের মতো বহু পুরনো কর্মীর প্রতি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসেনি। এমনকি, তিনি এখনো এই টুর্নামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করার সুযোগ পান না। এটা সত্যিই হতাশাজনক।

লি এলডারের এই সাহসী পদক্ষেপ শুধু গল্ফ খেলার জগৎকে নয়, বরং সমাজের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটেও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর এই সংগ্রাম এবং সাফল্যের কথা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মানুষের মনে গেঁথে থাকবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *