ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক: সমর্থন সত্ত্বেও, চাকরি হারাচ্ছেন শ্রমিকেরা!

যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্কের কারণে মার্কিন গাড়ি শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতি, উদ্বেগে শ্রমিক সংগঠন।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার কর্তৃক আরোপিত আমদানি শুল্কের (ট্যারিফ) কারণে দেশটির গাড়ি শ্রমিকদের মধ্যে ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যদিও ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্স (ইউএডব্লিউ) ইউনিয়ন শুরুতে এই শুল্কের পক্ষে মত দিয়েছিল, কিন্তু এর ফলস্বরূপ শ্রমিকদের চাকরি হারানোর ঘটনা ঘটছে।

এই পরিস্থিতিতে উত্তর আমেরিকার গাড়িশিল্পে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর কারখানাগুলোকে প্রভাবিত করছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, ট্যারিফের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত স্টিলল্যান্টিস (Stellantis) কোম্পানির বেশ কয়েকটি কারখানায় কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়েছে। মূলত কানাডা ও মেক্সিকোতে উৎপাদিত গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এর ফলে, প্রায় ৯০০ জন মার্কিন গাড়ি শ্রমিককে সাময়িকভাবে কর্মহীন হতে হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য ছিল, বিদেশি গাড়ি আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধি করে দেশীয় গাড়ি শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া এবং কর্মসংস্থান বাড়ানো। কিন্তু এর ফলস্বরূপ, অনেক কারখানায় উৎপাদন কমে যাওয়ায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর আমেরিকার গাড়িশিল্প দীর্ঘদিন ধরে একটি সমন্বিত কাঠামোর মধ্যে কাজ করে আসছে। এর ফলে, তিনটি দেশের মধ্যে যন্ত্রাংশ ও গাড়ির বিভিন্ন অংশ অবাধে আসা-যাওয়া করে।

কিন্তু শুল্কের কারণে এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে, যা শ্রমিকদের জন্য নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শ্রমিক ইউনিয়ন ইউএডব্লিউ’র নেতারা এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, ট্যারিফ নীতি হয়তো দেশের গাড়ি শিল্পকে সুরক্ষা দেবে, তবে এর ফলে শ্রমিকদের চাকরি হারানোর ঝুঁকি বাড়ছে।

কানাডার শ্রমিক ইউনিয়ন ‘ইউনিফোর’-এর (Unifor) পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতি সেখানকার শ্রমিকদের জন্য দ্রুত খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করবে। তাদের আশঙ্কা, এর ফলে কানাডার গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বর্তমানে, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, শ্রমিকরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। একদিকে যেমন তারা শুল্ক নীতির কারণে চাকরি হারাচ্ছেন, তেমনি তাদের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান নিয়েও অনিশ্চয়তা বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং বিশ্বায়নের ধারণাটিকে নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। কারণ, বিশ্বায়নের যুগে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং শ্রমিকদের জীবনযাত্রা একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *