আলাস্কার আকাশে নাসা-রকেটের আলোড়ন, চমকে উঠলো বিশ্ব!

আলাস্কার আকাশে এক অসাধারণ দৃশ্য! নাসা-র রকেট উৎক্ষেপণে সৃষ্টি হওয়া আলোর ঝলকানি, যা হয়তো আমাদের সরাসরি দেখার সুযোগ নেই, কিন্তু এর বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব অনেক।

সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা, সেখানকার অরোরা বোরিয়ালিস বা উত্তর মেরুপ্রভার ওপর গবেষণা চালিয়েছে। উদ্দেশ্য, এই প্রাকৃতিক আলোকের খেলা কীভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওপর প্রভাব ফেলে, তা নিরূপণ করা।

গবেষণার অংশ হিসেবে, ‘অরোরাল ওয়েভস একসাইটেড বাই সাবস্টর্ম অনসেট ম্যাগনেটিক ইভেন্টস’ (AWESOME) নামক একটি প্রকল্পের অধীনে আলাস্কার আকাশে তিনটি শব্দ-রকেট (sounding rocket) উৎক্ষেপণ করা হয়। এই রকেটগুলো মূলত সেখানকার তুষার অঞ্চলের আকাশে হওয়া এক বিশেষ ধরনের আলোকরশ্মি, যা ‘অরোরা সাবস্টর্ম’ নামে পরিচিত, তা নিয়ে গবেষণা করার জন্য পাঠানো হয়েছিল।

ইউনিভার্সিটি অফ আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস (UAF)-এর বিজ্ঞানীরা এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন।

২৫শে মার্চ তারিখে, বিজ্ঞানীরা প্রথমে ৪২ ফুট এবং ৭০ ফুটের দুটি রকেট উৎক্ষেপণ করেন। রকেটগুলো আকাশে ওড়ার সময় বিশেষ কিছু সরঞ্জাম, যেমন – আয়ন গেজ, ম্যাগনেটোমিটার এবং রঙিন গ্যাস নির্গত করার ব্যবস্থা নিয়ে গিয়েছিল।

এর ফলে, রাতের আকাশে সবুজ, নীল এবং বেগুনি রঙের আলো দেখা যায়, যা দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে তোলে।

তবে, ২৯শে মার্চ তারিখে উৎক্ষেপিত হওয়া তৃতীয় রকেটটি ছিল একটু অন্যরকম। প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে, এই রকেট থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে উজ্জ্বল সাদা রঙের একটি ডবল-রিং আকারের আলো দেখা যায়।

UAF-এর একজন অধ্যাপক, মার্ক কন্ডে, এই দৃশ্যটিকে “অসাধারণ” এবং “ভুলতেও পারা যায় না এমন” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

যদিও তৃতীয় রকেটের কাজটি পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়নি, তবুও এই অভিযান থেকে বিজ্ঞানীরা মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছেন। এই ডেটা বিশ্লেষণ করে, তাঁরা বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগের অরোরা কার্যকলাপ এবং এর ফলে স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ডিভাইস, যেমন – জিপিএস-এর কক্ষপথের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।

নাসার প্রোগ্রাম এক্সিকিউটিভ, অ্যালে মেন্ডোজা-হিল, এই গবেষণা সম্পর্কে বলেছেন, “অরোরা নিয়ে গবেষণা এবং মহাকাশ আবহাওয়ার পূর্বাভাস উন্নত করার ক্ষেত্রে এই উৎক্ষেপণগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” এই গবেষণার ফলস্বরূপ, ভবিষ্যতে মহাকাশ প্রযুক্তি এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত স্যাটেলাইট নির্ভর পরিষেবাগুলোর উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তথ্য সূত্র: Travel and Leisure

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *