মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ: ট্রাম্পের হুমকিতে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক!

ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনকে আরও শুল্কের হুমকি, বিশ্ববাজারে অস্থিরতা, বাংলাদেশের জন্য কী প্রভাব?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনকে আরও শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন দেখা গেছে, যা বাণিজ্যযুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

সোমবার (তারিখ উল্লেখ করতে হবে) ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, চীন যদি তাদের বাণিজ্য সংক্রান্ত ‘দীর্ঘদিনের অপব্যবহার’ বন্ধ করতে আগামীকাল (তারিখ উল্লেখ করতে হবে) পর্যন্ত তাদের শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র চীনের উপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। একই সঙ্গে, চীনের সঙ্গে আলোচনাও বন্ধ করে দেওয়া হবে।

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরেই, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার সকালে, ডাউ জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ ১,২০০ পয়েন্ট পর্যন্ত পড়ে যায়। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকও ‘beaur market’-এর দিকে যাচ্ছে, অর্থাৎ বাজারের দর পতন ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে আরও খারাপ দিন আসতে পারে।

যদিও ট্রাম্প তার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, বিশ্ব বাণিজ্যকে পুনরায় স্থিতিশীল করতে এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতে এই শুল্কগুলো জরুরি। তিনি চীনের বিরুদ্ধে ‘সবচেয়ে বড় অপব্যবহারকারী’ হওয়ার অভিযোগ এনেছেন। একই সঙ্গে, ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যা অর্থনীতির খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়ক হতে পারে।

এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার দিকে মনোযোগ দেবে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিজেরু ইশিবাও শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, এর ফলে জাপানের বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেছেন, শুল্কের বিষয়ে দেশগুলোকে তাদের কর ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে হবে।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে অনেকে বলছেন, এর ফলে আমেরিকার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিলিওনেয়ার ইলন মাস্ক শুল্কের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, শুল্কের কারণে তার কোম্পানি টেসলার উৎপাদন খরচ বাড়বে।

এই পরিস্থিতিতে, প্রশ্ন উঠেছে, এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশের উপর কেমন হবে? চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য-সংঘাত চললে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (RMG) শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের উচিত হবে— পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সম্ভাব্য ক্ষতির মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।

তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *