লন্ডনের মঞ্চে আলো ছড়াচ্ছে ডাচ নাট্যদল: অলিভার পুরস্কারে জয়জয়কার।
লন্ডনের থিয়েটার অঙ্গনের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার, অলিভার অ্যাওয়ার্ডস-এর আসর বসেছিল সম্প্রতি। সেখানে বাজিমাত করেছে নেদারল্যান্ডসের একটি নাট্যদল, যাদের সৃষ্টিশীলতার সাক্ষী থেকেছে বিশ্ব।
অ্যামস্টারডামের ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার অ্যামস্টারডাম (আইটিএ)-এর প্রযোজনা ‘দি ইয়ার্স’ এবং ‘ইডিপাস’ দুটি ভিন্ন নাটকের জন্য মোট চারটি পুরস্কার ঘরে তুলেছে তারা।
পশ্চিমের দেশগুলোতে মঞ্চ নাটক একটি শক্তিশালী মাধ্যম। সেখানে নাটকের নান্দনিকতা ও বিষয়বস্তু নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে নিয়মিত।
আইটিএ সেই পরীক্ষামূলক ধারার নাটকের জন্য সুপরিচিত। তাদের কাজের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়াটা শুধু তাদের নয়, বরং বিশ্ব নাটকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
‘দি ইয়ার্স’ নাটকটি ফরাসি সাহিত্যিক এর্নোর একটি বিখ্যাত উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি। এর পরিচালক ছিলেন এলিন আরবো।
নারীদের জীবনসংগ্রাম ও অভিজ্ঞতার এক শক্তিশালী চিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য তিনি পরিচিত। ‘দি ইয়ার্স’ নাটকে অভিনয় করেছেন ব্রিটিশ অভিনেত্রী রোমলা গ্যারে।
সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন তিনি। পরিচালক এলিন আরবোও সেরা পরিচালকের পুরস্কার অর্জন করেছেন।
অন্যদিকে, গ্রিক পুরান থেকে অনুপ্রাণিত ‘ইডিপাস’ নাটকটি পরিচালনা করেছেন রবার্ট আইক। এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন মার্ক স্ট্রং এবং তাঁর বিপরীতে ছিলেন লেসলি ম্যানভিল।
লেসলি ম্যানভিল সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। এই সাফল্যের পেছনে আইটিএ’র অবদান অনস্বীকার্য।
এই সাফল্যের কারণ হিসেবে মনে করা হয়, বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি ও শৈলীর মিশেল ঘটিয়ে নাটক তৈরি করা।
এলিন আরবোর পরিচালনায় নরওয়েজিয়ান নাট্যকলার প্রভাব, আইটিএ-এর পরীক্ষামূলক ও ধারণাগত কাজের ধারা, এবং ব্রিটিশ নাটকের গল্প বলার নিজস্বতা—সবকিছু মিলেমিশে এক নতুন ধরনের নাট্যশৈলী তৈরি হয়েছে, যা দর্শক ও সমালোচকদের মন জয় করেছে।
আইটিএ-এর পরিচালক এলিন আরবো জানান, ভবিষ্যতে আরও বেশি করে তারা ব্রিটিশ দর্শকদের কাছে তাদের কাজ পৌঁছে দিতে চান।
সংস্কৃতি বিনিময়ের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক নেতারা হয়তো সীমান্ত বন্ধ করতে চান, কিন্তু সংস্কৃতি বিকাশের জন্য ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির আদান-প্রদান খুবই জরুরি।”
শুধু তাই নয়, আইটিএ-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করার জন্য অন্যান্য দেশের নাট্য নির্মাতাদেরও আগ্রহ বাড়ছে।
পরিচালক রেবেকা ফ্রেকনাল সম্প্রতি আইটিএ-তে ‘মিস জুলি’ নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন।
আন্তর্জাতিক এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকলে, অদূর ভবিষ্যতে আরও অনেক পুরস্কার যে তারা জিতবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান