অ্যাক্রোপলিসে সিনেমা: লান্থিমোসের আবেদনে চরম প্রত্যাখ্যান!

গ্রিক চলচ্চিত্র নির্মাতা ইয়র্গস লান্থিমোসকে এথেন্সের অ্যাক্রোপলিসে তার নতুন চলচ্চিত্রের কিছু দৃশ্য ধারণের অনুমতি দেয়নি গ্রিক সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, আসন্ন সায়েন্স ফিকশন কমেডি চলচ্চিত্র ‘বাগুনিয়া’র কিছু দৃশ্যের শুটিং করার জন্য আবেদন করেছিলেন লান্থিমোস। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের আপত্তির কারণে সেই অনুমতি মেলেনি।

বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রস্তাবিত দৃশ্যগুলো অ্যাক্রোপলিসের প্রতীকী তাৎপর্য এবং এর মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পরিচালক লান্থিমোস এর আগে তার ‘পুরor থিংস’ (Poor Things) ছবিতে কাজের জন্য পরিচিতি লাভ করেন।

এই ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন এমা স্টোন, যিনি সেরা অভিনেত্রীর অস্কার জিতেছেন।

নতুন চলচ্চিত্র ‘বাগুনিয়া’তে এমা স্টোন একজন প্রধান ওষুধ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করছেন।

ছবিতে দেখা যাবে, তাকে অপহরণ করেন একজন ষড়যন্ত্রকারী মৌমাছি পালনকারী, যার ভূমিকায় আছেন জেসি প্লেমন্স।

ধারণা করা হচ্ছে, নভেম্বরে মুক্তি পাওয়ার কথা থাকা এই সিনেমাটি বিভিন্ন পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হতে পারে।

ছবিতে যে দৃশ্যগুলোর শুটিং করার কথা ছিল, সেখানে দেখা যেত গ্রিক দুর্গের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান, প্রোপাইলা এবং পার্থেননের মাঝে ৭০টি মৃতদেহ রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রোপাইলা হলো ডোরিক প্রবেশদ্বার এবং পার্থেনন দেবী এথেনার উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত একটি মন্দির।

শোনা যাচ্ছে, প্রথমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় লান্থিমোসের এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল এবং অ্যাক্রোপলিসে শুটিংয়ের জন্য নির্ধারিত দৈনিক ১,৯৮৪ ইউরোর ফি মওকুফ করতেও রাজি হয়েছিল তারা।

কারণ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লান্থিমোসের খ্যাতি রয়েছে।

তবে, অ্যাক্রোপলিসের তত্ত্বাবধানকারী সেন্ট্রাল আর্কিওলজিক্যাল কাউন্সিল এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

তাদের মতে, দৃশ্যগুলো উপযুক্ত নয় এবং শ্রদ্ধাবোধের অভাব রয়েছে।

পরিবর্তে, তারা কাছাকাছি অন্য কোনো স্থানে শুটিং করার পরামর্শ দেয়।

পরে লান্থিমোসের দল তাদের আগের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রীর কাছে চিঠি দেয়।

কিন্তু পর্যাপ্ত কারণ দেখাতে না পারায় কেন্দ্রীয় প্রত্নতাত্ত্বিক পরিষদকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বলা হয়নি।

ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে অ্যাক্রোপলিসের গুরুত্ব অনেক।

এই স্থানটি বিশ্বজুড়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হয়।

এর আগে, অ্যাক্রোপলিসে বিভিন্ন চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৯৫৭ সালের ‘বয় অন এ ডলফিন’ এবং ২০১৪ সালের ‘দ্য টু ফেসেস অফ জানুয়ারি’র মতো সিনেমা।

উল্লেখ্য, অ্যাক্রোপলিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর শুটিংয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত কর্তৃপক্ষের কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়।

কখনও কখনও এই ধরনের স্থানগুলো সিনেমার প্রয়োজনে নতুন করে তৈরি করা হয়।

ইয়র্গস লান্থিমোস একজন খ্যাতিমান পরিচালক, যিনি ২০০৪ সালের এথেন্স অলিম্পিকের টেলিভিশন ভিজ্যুয়ালের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

তার পরিচালিত ছবিগুলোর মধ্যে ‘ডগটুথ’, ‘আল্পস’, ‘দ্য লবস্টার’ এবং ‘দ্য কিলিং অফ এ স্যাক্রেড ডিয়ার’ উল্লেখযোগ্য।

এছাড়াও, তিনি ‘দ্য ফেভারিট’ (২০১৮) সিনেমা বানিয়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *