সাংবাদিকদের নিয়ে মন্তব্যের জেরে বিতর্কে রিপাবলিকান সিনেটর, হাসির আড়ালে কি লুকানো?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান সিনেটর মার্কওয়েইন মলিন সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ‘মিটিয়ে নেওয়ার’ একটি বিতর্কিত ইঙ্গিত দিয়েছেন। ওকলাহোমার এই সিনেটর, যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসাবে পরিচিত, সাংবাদিকদের ‘খুন করার’ কথা উল্লেখ করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন।

সিনেটর মলিন, যিনি একসময় মিক্সড মার্শাল আর্ট (এমএমএ) ফাইটার ছিলেন, সম্প্রতি এক টুইট বার্তায় ১৮৯০ সালের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। যেখানে চার্লস কিনকাইদ নামে এক সাংবাদিক কেনটাকি রাজ্যের প্রাক্তন কংগ্রেসম্যান উইলিয়াম টলবিকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন।

ঘটনার উল্লেখ করে মলিন বলেন, “সাংবাদিক ও তাদের লেখা নিয়ে অনেক কথা বলার আছে, তবে আমার মনে হয়, আমরা যদি সেই পুরনো কায়দায় মতের অমিলগুলো মেটাতে পারতাম, তাহলে তারা সম্ভবত এত মিথ্যা খবর লিখত না।”

পরবর্তীতে, সমালোচনার মুখে মলিন তাঁর এই মন্তব্যকে নিছক ‘ঠাট্টা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি আরও যোগ করেন, রাজনৈতিক বিরোধ মেটাতে তিনি ‘বেত্রাঘাত’ ফিরিয়ে আনার বিষয়েও মজা করেছিলেন।

তবে, তাঁর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিক সংগঠন এবং মানবাধিকার কর্মীরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, এর আট মাস আগে, নেভাদার একজন রাজনীতিবিদ, রবার্ট টেলেসকে লাস ভেগাস রিভিউ-জার্নালের সাংবাদিক জেফ জার্মানকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

জার্মান টেলেসের কাজকর্ম নিয়ে সমালোচনা করে প্রতিবেদন লিখেছিলেন।

সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আগে মলিন ১০ বছর ধরে কংগ্রেসম্যান ছিলেন। অতীতেও তিনি বিভিন্ন সময়ে সহিংসতার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এমনকি, পেশাদারী কর্মজীবনের শুরুতে তিনি কয়েকবার মারামারিতেও জড়িয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের ঘটনা বেড়েছিল। ট্রাম্প প্রায়ই গণমাধ্যমকে ‘মিথ্যাবাদী’ এবং ‘শত্রু’ হিসেবে চিহ্নিত করতেন।

তাঁর অভিযোগ ছিল, গণমাধ্যম তাঁর বিরুদ্ধে ‘ভুল’ খবর পরিবেশন করে। ভবিষ্যতে আবারও ক্ষমতায় এলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং এফবিআই প্রধান।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের এমন মন্তব্য গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *