ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, চীনকে আরও একবার বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন। চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে আগামী ৯ই এপ্রিল থেকে চীনের থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৮ই এপ্রিল) সকালে ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরেই বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প যখন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর ঘোষণা করেন, তখন থেকেই বিশ্ব বাজারের পরিস্থিতি টালমাটাল। এর অংশ হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের থেকে আসা পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।
এর জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক বসায়। পরিস্থিতি আরও জটিল করে ট্রাম্পের নতুন এই হুমকি।
ট্রাম্পের দাবি, চীন দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন নিয়ম লঙ্ঘন করে আসছে। তিনি তার এই পদক্ষেপকে চীনের ‘প্রতিশোধমূলক’ শুল্কের জবাব হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, চীন যদি আগামী ৮ই এপ্রিলের মধ্যে তাদের শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে। শুধু তাই নয়, চীনের সঙ্গে আলোচনাও তিনি বন্ধ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
হোয়াইট হাউসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন করে আরোপিতব্য এই শুল্ক, গত সপ্তাহে ঘোষিত ৩৪ শতাংশ শুল্ক এবং এর আগে থেকে বিদ্যমান ২০ শতাংশ শুল্কের অতিরিক্ত হবে।
অর্থাৎ, চীনের থেকে আসা পণ্যের উপর সবমিলিয়ে প্রায় ১০৪ শতাংশ শুল্কের বোঝা চাপতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। যদিও এমনও শোনা যাচ্ছিল যে, ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করতে পারেন, তবে হোয়াইট হাউস দ্রুতই এটিকে ‘ভুল খবর’ হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে গভীর হতে শুরু করেছে। বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়তে পারে, যা বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
বিশেষ করে, চীন থেকে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়লে, তা দেশের বাজারেও প্রভাব ফেলবে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে দিতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের জন্য বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং দেশের অর্থনীতির সুরক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: The Guardian