যুবরাজের দুঃসংবাদ! সামাজিক নিরাপত্তা চেয়ে আইনি লড়াইয়ে হার

বেলজিয়ামের রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স লরেন্ট সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা চেয়ে আদালতে হেরে গেছেন। তিনি চেয়েছিলেন রাজকীয় ভাতার বাইরেও তার কাজের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা। তবে আদালত তার আবেদনকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে রায় দিয়েছেন।

জানা গেছে, প্রিন্স লরেন্ট দেশটির প্রাক্তন রাজা ও রানীর কনিষ্ঠ পুত্র। তার যুক্তি ছিল, তিনি একজন স্বতন্ত্র উদ্যোক্তার মতো কাজ করেন এবং সে অনুযায়ী তার সামাজিক নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

তিনি আরও জানান, অর্থ উপার্জনের চেয়ে এটি একটি ‘নীতিগত’ বিষয়।

কিন্তু ব্রাসেলসের একটি আদালত সোমবার জানায়, ৬১ বছর বয়সী প্রিন্সের দায়িত্ব মূলত সরকারি কর্মচারীদের মতোই। সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু সুবিধা থাকলেও, সেখানে কোনো সমন্বিত সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।

প্রিন্সের আইনজীবী অলিভার রিজকার্ট জানিয়েছেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা বিবেচনা করছেন।

তিনি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, “আমরা যা চেয়েছিলাম, সেখানে পৌঁছাতে পারিনি, তবে রায়টি বিস্তারিত এবং সুস্পষ্ট যুক্তিসম্পন্ন।

আমি এর কারণ বুঝতে পারছি।”

প্রিন্স লরেন্ট গত বছর রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রায় ৩ লক্ষ ৮৮ হাজার ইউরো (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যা প্রায় ৪ কোটি ৫২ লক্ষ টাকার সমান) ভাতা পেয়েছেন এবং তিনি বিনামূল্যে তার বাড়িতে বসবাস করেন।

তিনি আরও জানান, এই বিষয়টি আর্থিক সামর্থ্যের নয়, বরং নীতির বিষয়। তিনি বলেন, “যখন কোনো অভিবাসী এখানে আসে, তখন সে নিবন্ধিত হয় এবং তার অধিকার থাকে।

আমিও হয়তো একজন অভিবাসী, তবে এমন একজন যার পরিবার এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে।”

আদালতে দেওয়া এক বিবৃতিতে রিজকার্ট জানান, প্রিন্স লরেন্ট কোনো ‘খেয়ালের বশে’ এমনটা করেননি। তিনি আরও যোগ করেন, সামাজিক নিরাপত্তা হলো ‘বেলজিয়ামের আইনে প্রত্যেক বাসিন্দার অধিকার, দরিদ্র থেকে শুরু করে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি পর্যন্ত’।

আইনজীবীর ভাষ্যমতে, প্রিন্স লরেন্ট তার ভাতার মাত্র ২৫ শতাংশ বেতন হিসেবে পান, কারণ বাকিটা ভ্রমণ এবং স্টাফদের বেতনসহ পেশাগত বিভিন্ন খরচে ব্যয় হয়।

রিজকার্ট আরও জানান, এর ফলে প্রিন্সের মাসিক বেতন দাঁড়ায় ৫ হাজার ইউরো, যা বেলজিয়ামের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার গড় বেতনের কাছাকাছি, তবে তার কোনো পূর্ণাঙ্গ সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা নেই।

প্রিন্স লরেন্ট এবং তার ব্রিটিশ স্ত্রী ক্লেরের তিনটি সন্তান রয়েছে, যাদের বয়স এখন বিশের কোঠায়।

তিনি তার পরিবারের আর্থিক সুরক্ষার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

কারণ, তার মৃত্যুর পর রাজকীয় ভাতা কমে যাবে।

সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা না থাকলে লরেন্ট কিছু চিকিৎসা খরচ এবং অসুস্থতাজনিত কারণে বেতন পাওয়ার মতো সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালে প্রিন্স লরেন্ট ফেডারেল সরকারের অনুমোদন ছাড়া বিদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করায় তার বার্ষিক ভাতা ১৫ শতাংশ কমানো হয়েছিল।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *