যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট পুরনো একটি আইন ব্যবহার করে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে রায় দিয়েছে। তবে, আদালত এই বিষয়ে কিছু সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে।
সোমবারের এই রায়ে জানানো হয়েছে, ১৯ শতকের একটি আইন ব্যবহার করে, সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের ভেনেজুয়েলায় ফেরত পাঠানো যাবে।
আদালত জানিয়েছে, এই সংক্রান্ত কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ দায়ের করতে হলে, তা ওয়াশিংটন ডিসিতে নয়, বরং টেক্সাসে করতে হবে, যেখানে অভিবাসীদের আটক রাখা হয়েছে। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নয় জন বিচারকের মধ্যে পাঁচজন ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে রায় দিয়েছেন, যেখানে চারজন বিচারক ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
আদালতের এই রায়ের ফলে, অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আপাতত চালু থাকতে পারবে। তবে, আদালত স্পষ্ট করেছে যে, এই ধরনের বিতাড়ন প্রক্রিয়া শুরুর আগে বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা আবশ্যক।
বিতাড়িত হতে যাওয়া ব্যক্তিদেরকে এই বিষয়ে নোটিশ দিতে হবে এবং তাদের আইনি সহায়তা পাওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসন চেয়েছিল, দ্রুত বিতাড়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। তারা ১৯ শতকের ‘অ্যালিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ নামক একটি আইনের আশ্রয় নেয়।
এই আইনটি সাধারণত যুদ্ধের সময় বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতো, যারা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা জন্য হুমকি হতে পারে। এই আইনের অধীনে, প্রেসিডেন্ট বিদেশি নাগরিকদের আটক, বিতাড়িত কিংবা তাদের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন।
আদালতের এই রায়ের পর, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই রায় আইনের শাসনকে সমুন্নত রেখেছে এবং সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।
আদালতের রক্ষণশীল বিচারক অ্যামি কোনি ব্যারেট এবং তিনজন উদারপন্থী বিচারক এই রায়ের বিরোধিতা করেছেন।
আদালতের এই সিদ্ধান্ত সেই সময়ে এসেছে, যখন ট্রাম্প প্রশাসন বিতর্কিত ‘অ্যালিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’-এর আওতায় তথাকথিত ‘ট্রেন দে আরুয়া’ গ্যাংয়ের সদস্যদের দ্রুত বিতাড়নের চেষ্টা করছিল।
এই গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক হওয়া কিছু ভেনেজুয়েলার নাগরিক, তাদের বিতাড়ন বন্ধের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তারা যুক্তি দেখিয়েছিলেন, এই আইনটি কেবল যুদ্ধ ঘোষণা করা হলে অথবা যুক্তরাষ্ট্রের উপর আক্রমণের সময় ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই মামলার শুনানিতে বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ বিতাড়ন প্রক্রিয়া স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সেই নির্দেশ অমান্য করে বিতাড়ন প্রক্রিয়া চালিয়ে যায়। পরে অবশ্য আদালত এই বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত জানায়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান