বাইডেন নীতি: ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা অভিবাসীদের বহিষ্কার!

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে নতুন পরিবর্তনের ফলে, বাইডেন প্রশাসনের আমলে চালু হওয়া একটি অ্যাপের মাধ্যমে আসা অভিবাসীদের বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (DHS) জানিয়েছে, ‘CBP One’ অ্যাপ ব্যবহার করে যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন, তাদের এখন অবিলম্বে দেশ ত্যাগ করতে হবে।

খবরটি এমন এক সময়ে এলো, যখন অভিবাসন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক চাপ বাড়ছে।

জানুয়ারী ২০২৩ সাল থেকে প্রায় নয় লক্ষাধিক মানুষ এই CBP One অ্যাপ ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। সাধারণত, তাদের দুই বছর পর্যন্ত সেখানে থাকার এবং কাজ করার অনুমতি ছিল।

এই অনুমতি ‘প্যারোল’ নামে পরিচিত ছিল, যা মূলত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে দেওয়া হতো।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (DHS) জানিয়েছে, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার অংশ হিসেবে তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের মতে, বাইডেন প্রশাসনের প্যারোল ব্যবহারের নীতি, যা ১৯৫২ সাল থেকে কোনো প্রেসিডেন্টের আমলে দেখা যায়নি, তা ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ সীমান্ত সংকট’ তৈরি করেছে।

জানা গেছে, বিতাড়িত করার নির্দেশ পাওয়া অভিবাসীদের, CBP Home নামক একটি অ্যাপ ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। DHS এর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আপনাদের এখন যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করার সময় হয়েছে।”

শুধু তাই নয়, ট্রাম্প প্রশাসন কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনেজুয়েলার প্রায় ৫ লক্ষ ৩২ হাজার নাগরিকের প্যারোলও বাতিল করতে যাচ্ছে, যারা নিজেদের খরচে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন।

এছাড়াও, প্রায় ৬ লক্ষ ভেনেজুয়েলার এবং ৫ লক্ষ হাইতির নাগরিকের ‘টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস’ (TPS) বাতিলেরও ঘোষণা করা হয়েছে।

টিপিএস হলো একটি বিশেষ ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে কোনো দেশের নাগরিকরা, যাদের নিজ দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, যুক্তরাষ্ট্রে সাময়িকভাবে বসবাসের অনুমতি পান।

এই সিদ্ধান্তের ফলে হাজার হাজার অভিবাসী নতুন করে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। উল্লেখ্য, CBP One অ্যাপটি মূলত বাইডেন প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল, যা অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা কমাতে এবং অভিবাসীদের জন্য বৈধ পথ তৈরি করতে সহায়তা করত।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এই অ্যাপের মাধ্যমে নতুন করে প্রবেশের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, অভিবাসন বিষয়ক নীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *