অর্থ বাঁচাতে এবার ডগ-এর পথে রাজ্যগুলি, কতটা সুবিধা হবে?

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে রিপাবলিকান গভর্নর ও আইনপ্রণেতারা সম্প্রতি এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছেন। তাঁরা বিখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (DOGE)-এর ধারণা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সরকারি কার্যক্রমে ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছেন।

বিভিন্ন রাজ্যে সরকার পরিচালনায় পরিবর্তন আনার জন্য গঠিত হয়েছে বিশেষ টাস্ক ফোর্স বা কমিটি। এইসব উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো সরকারি ব্যয় কমানো। ফ্লোরিডা ও আইওয়া’র গভর্নররা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (Artificial Intelligence) ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি দপ্তরগুলোর কার্যকারিতা আরও বাড়ানোর কথা বলছেন।

ওকলাহোমার গভর্নর কেভিন স্টিট সরকারি বিভিন্ন চুক্তি পর্যালোচনা করে খরচ কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। এছাড়াও, কিছু রাজ্যে কর্মীদের কর্মপরিবেশ এবং সুযোগ-সুবিধা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

তবে, রাজ্য পর্যায়ে মাস্কের DOGE-এর ধারণা বাস্তবায়নের গতি ফেডারেল সরকারের তুলনায় কিছুটা ধীর। উদাহরণস্বরূপ, আইওয়া রাজ্যে গভর্নর কিম রেইনল্ডস ফেব্রুয়ারিতে একটি DOGE টাস্ক ফোর্স গঠন করেন, যার প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ঘটনার প্রায় দুই মাস পর।

অন্যদিকে, নিউ হ্যাম্পশায়ারের গভর্নর কেলি আইয়োট নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করলেও, সেটি এখন পর্যন্ত মাত্র দু’বার মিলিত হয়েছে।

এই রাজ্যগুলোর গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি প্রধান পার্থক্য হলো এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া। মাস্কের DOGE দ্রুততার সঙ্গে ব্যয় সংকোচনের পদক্ষেপ নিলেও, রাজ্যগুলোতে প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ।

কারণ, অনেক রাজ্যে বাজেট তৈরি ও অনুমোদনের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাছাড়াও, বিভিন্ন রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিছু রাজ্যে সরকার ও আইনসভার মধ্যে ক্ষমতার বিভাজন থাকায়, অনেক সময় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই রাজ্য পর্যায়ের DOGE-এর ধারণা কতটা সফল হবে, তা এখনই বলা কঠিন। তবে, ইলন মাস্ক এবং তাঁর DOGE-এর প্রতি জনগণের মনোভাবের পরিবর্তন হলে, রাজ্য পর্যায়ের এই উদ্যোগগুলোও হয়তো তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, সরকারি কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ব্যয় সংকোচনের ধারণা এখন বিশ্বজুড়ে গুরুত্ব পাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও সরকারি ব্যয়ে স্বচ্ছতা আনা এবং প্রযুক্তিনির্ভরতা বাড়ানোর মাধ্যমে জনগণের সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *