কোরীয় উপদ্বীপের সীমান্তে উত্তেজনা, উত্তর কোরিয়ার সেনাদের সীমান্ত অতিক্রমের পর দক্ষিণ কোরিয়ার সতর্কতামূলক গুলি।
কোরীয় উপদ্বীপের সামরিকীকৃত অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করার পর দক্ষিণ কোরিয়া সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছে। মঙ্গলবার প্রায় ১০ জন উত্তর কোরীয় সেনা সামরিক বিভাজন রেখা (এমডিএল) অতিক্রম করে দক্ষিণ কোরিয়ার দিকে প্রবেশ করে।
এর প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী সতর্কতামূলক গুলি চালায় এবং তাদের সীমান্ত ত্যাগ করতে বলে। গত ১০ মাসের মধ্যে এমন ঘটনা দ্বিতীয়বার ঘটলো, যা কোরীয় উপদ্বীপে বিদ্যমান উত্তেজনার চিত্রকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ (জেসিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার দিকে উত্তর কোরিয়ার সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে। এরপর সতর্কবার্তা এবং গুলি ছোড়ার পর তারা আবার উত্তর কোরিয়ার দিকে ফিরে যায়।
জেসিএস এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, “প্রায় ১০ জন উত্তর কোরীয় সেনা সামরিক বিভাজন রেখা অতিক্রম করার পরে আমাদের সামরিক বাহিনী সতর্কতামূলক ঘোষণা ও গুলি চালায়। আমরা উত্তর কোরীয় সামরিক বাহিনীর গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।”
এই ঘটনার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, গত জুন মাসেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল, যখন উত্তর কোরীয় সেনারা সতর্কবার্তা এবং গুলির পর সীমান্ত অতিক্রম করে।
তবে, সেই সময়ে পরিস্থিতি বড় ধরনের সংঘাতে রূপ নেয়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্ভবত সেনারা ভুল করে এমনটা করেছে। কারণ, যে স্থানটিতে সেনারা প্রবেশ করেছে, সেটি ছিল বনভূমি এবং সেখানে এমডিএল চিহ্নিত করা ছিল কঠিন।
এছাড়াও, তাদের কাছে নির্মাণ সরঞ্জাম ছিল।
কোরীয় উপদ্বীপের এই ডিএমজেড অঞ্চলটি প্রায় ২৪৮ কিলোমিটার (১৫৪ মাইল) দীর্ঘ এবং ৪ কিলোমিটার (২.৫ মাইল) প্রশস্ত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত সীমান্ত হিসেবে পরিচিত।
এখানে প্রায় ২০ লক্ষ মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে এবং উভয় পাশে কাঁটাতারের বেড়া, ট্যাংক প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও সামরিক বাহিনীর কড়া পাহারা রয়েছে।
বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন তার সামরিক ও পারমাণবিক সক্ষমতা প্রদর্শন করছেন। ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন।
এমনকি, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে আলোচনার আহ্বান জানানো হলেও, কিম জং উন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
তবে, উত্তর কোরিয়ার দাবি, ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তাদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বৈরিতা আরও বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর খবর অনুসারে, কোরীয় উপদ্বীপের এই ঘটনা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা