দীর্ঘদিনের দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসার গভীরতা কমে আসা বা অন্তরঙ্গতার অভাব – এমন সমস্যা অনেকের জীবনেই দেখা যায়। সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দুই সঙ্গীর মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক এবং শারীরিক ঘনিষ্ঠতা কমে যাওয়ার একটি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে সমাধানের পথ খুঁজছেন তারা।
তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়েই আজকের এই প্রতিবেদন।
ষাটের কোঠায় পা রাখা এই নারী যুগলের সম্পর্কটি ছিল প্রায় ২০ বছরের। তাদের সম্পর্কের গভীরতা ছিল অনেক, কিন্তু ১৩ বছর আগে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।
এর পেছনে কয়েকটি কারণ ছিল। তাদের একজন, যিনি সঙ্গিনী, মেনোপজের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, ফলে তাঁর যৌনজীবনে আগ্রহ কমে যায়। এছাড়া, তাদের একটি পোষ্য কুকুর তাদের সঙ্গে ঘুমাতো, যা ঘনিষ্ঠতার ক্ষেত্রে একটি বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
অন্যদিকে, তাদের মধ্যে একজন সঙ্গিনী কিছু জিনিসপত্র জমা করে রাখার সমস্যা বা ‘হোarding problem’-এর শিকার ছিলেন। যদিও তিনি চিকিৎসার সাহায্য নিচ্ছেন, কিন্তু তাঁর সঙ্গিনী সম্ভবত এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তাঁর প্রতি কিছুটা অসন্তুষ্ট ছিলেন।
তাঁর মনে হতো, এই বিষয়টি তাঁর সঙ্গীর কাছ থেকে ভালোবাসা ও মনোযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে।
দাম্পত্য জীবনে এমন সমস্যা সমাধানে তারা যুগল পরামর্শকের (couples therapy) সাহায্য নিচ্ছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
সম্পর্কের এই জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে তারা এখন একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিচ্ছেন।
এই বিষয়ে মনোবিদ পামেলা স্টিফেনসন কানোলির মতে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে সঙ্গীর কাছ থেকে ভালোবাসা না পাওয়ার অনুভূতি সচেতন বা অবচেতন – দুটোই হতে পারে। অনেক সময় গভীর কোনো ক্ষোভ বা অসন্তুষ্টি ভালোবাসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি যুগল পরামর্শ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।
পরামর্শে আরও বলা হয়েছে, সম্পর্কের এই ধরনের সমস্যাকে ‘লেসবিয়ান বেড ডেথ’-এর মতো কোনো লেবেল না দেওয়াই ভালো। কারণ, এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করলে অনেক সময় অসহায়তা তৈরি হতে পারে।
বরং ধৈর্য ধরে, একে অপরের প্রতি সহানুভূতি রেখে, সম্পর্কের উন্নতির চেষ্টা করা উচিত। পরস্পরের প্রতি মনোযোগ এবং ভালোবাসার মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
যদি কোনো দম্পতির মধ্যে এমন সমস্যা দেখা দেয়, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ, অনেক সময় সামান্য পরিবর্তনে সম্পর্কের জটিলতা কাটিয়ে ওঠা যায়।
তথ্য সূত্র: The Guardian