ট্রাম্পের কয়লা নির্ভরতা: পরিবেশের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কয়লা শিল্পের পুনরুজ্জীবনে নির্বাহী আদেশ জারি করতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার তিনি এই সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করবেন বলে জানা গেছে।

হোয়াইট হাউসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা এপি’র প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

খবরে প্রকাশ, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হল, পুরনো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে চালু রাখার অনুমতি দেওয়া। এছাড়া, ফেডারেল ভূমি থেকে কয়লা উত্তোলনে বিদ্যমান কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে ডেটা সেন্টার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্প কয়লার প্রতি সমর্থন জুগিয়েছেন। তিনি প্রায়ই কয়লাকে ‘সুন্দর’ আখ্যা দিয়ে এর উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলেছেন।

যদিও বাস্তবতা হল, কয়েক দশক ধরেই এই শিল্পটি ক্রমাগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ফলে কয়লা শিল্পের সাময়িক উন্নতি হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম।

কারণ, বাজারে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম তুলনামূলকভাবে কম এবং নবায়নযোগ্য শক্তির চাহিদা বাড়ছে।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ফলে ফেডারেল সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হবে, তারা যেন ফেডারেল ভূমি থেকে কয়লা উত্তোলনের সুযোগ তৈরি করে এবং কয়লা খনির ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়াকে অগ্রাধিকার দেয়।

এছাড়া, ওবামা আমলের কয়লা লিজ সংক্রান্ত স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ারও ঘোষণা আসতে পারে। একইসাথে, কয়লা ও কয়লা প্রযুক্তি রপ্তানির বিষয়টি প্রসারিত করার কথাও ভাবা হচ্ছে।

জানুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেছিলেন, “কয়লাকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। আবহাওয়াও না, বোমাও না।

আমাদের কাছে অন্য যে কারও চেয়ে বেশি কয়লা মজুদ রয়েছে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর বৈশ্বিক প্রবণতার প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত পরিবেশগত উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

কয়লার ব্যবহার বায়ু দূষণ এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মতো সমস্যাগুলো আরও বাড়াতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের নামও উল্লেখযোগ্য।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *