সমুদ্রে ক্ষতিকর রাসায়নিক: বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত সানস্ক্রিন বাছুন।
গরমের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে বাঁচানোর প্রয়োজনীয়তাও বাড়ে। সানস্ক্রিন এক্ষেত্রে আমাদের প্রধান ভরসা।
কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানি না, কিছু সানস্ক্রিনে এমন রাসায়নিক উপাদান থাকে যা সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিশেষ করে প্রবাল প্রাচীর বা কোরাল রিফের (Coral Reef) জন্য এই উপাদানগুলো খুবই উদ্বেগের কারণ।
আসলে, সানস্ক্রিনে ব্যবহৃত কিছু উপাদান, যেমন – অক্সিবেনজোন (Oxybenzone) এবং অক্টিনক্সিট (Octinoxate), সামুদ্রিক জীবনের জন্য বিষাক্ত।
এই রাসায়নিকগুলো প্রবালের ক্ষতি করে এবং তাদের বিলুপ্তি ত্বরান্বিত করে।
শুধু তাই নয়, এইসব উপাদান মানুষের ত্বকের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে, যা ত্বকের অ্যালার্জি এবং হরমোনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
তাহলে উপায়? আমাদের এমন সানস্ক্রিন বেছে নিতে হবে যা একদিকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করবে, অন্যদিকে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের কোনো ক্ষতি করবে না।
একে বলা হয় ‘রিফ-সেফ’ (reef-safe) সানস্ক্রিন।
রিফ-সেফ সানস্ক্রিন বাছার কিছু জরুরি বিষয়:
১. উপাদান (Ingredients):
- যেসব সানস্ক্রিনে জিংক অক্সাইড (Zinc Oxide) বা টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড (Titanium Dioxide) আছে, সেগুলো ব্যবহার করা ভালো। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এই উপাদানগুলো যেন ‘নন-নানো’ (non-nano) আকারের হয়, যা সহজে প্রবালের শরীরে প্রবেশ করতে পারে না।
- অক্সিবেঞ্জোন (Oxybenzone) এবং অক্টিনক্সিট (Octinoxate) – এই উপাদানগুলো অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।
২. এসপিএফ (SPF) :
আপনার সানস্ক্রিনের এসপিএফ (Sun Protection Factor) কমপক্ষে ৩০ হতে হবে।
৩. ব্রড-স্পেকট্রাম সুরক্ষা (Broad-spectrum protection):
সানস্ক্রিনটি অবশ্যই ‘ব্রড-স্পেকট্রাম’ হতে হবে, যা সূর্যের ক্ষতিকর UVA এবং UVB উভয় রশ্মি থেকেই ত্বককে রক্ষা করে।
৪. জলরোধী (Water Resistance):
সাঁতার কাটার সময় বা ঘাম হলে সানস্ক্রিন ধুয়ে যেতে পারে। তাই জলরোধী সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ভালো।
রিফ-সেফ সানস্ক্রিন এখন বিশ্বজুড়ে বেশ জনপ্রিয়।
বাজারে নানান ধরনের রিফ-সেফ সানস্ক্রিন পাওয়া যায়।
বাংলাদেশেও এখন এই ধরনের সানস্ক্রিনের চাহিদা বাড়ছে।
কেনার আগে অবশ্যই উপাদানগুলো দেখে নিন এবং নিশ্চিত করুন যে সেটি পরিবেশবান্ধব।
এছাড়াও, ব্যবহারের সময় প্যাকেজের নির্দেশিকা ভালোভাবে অনুসরণ করা উচিত।
মনে রাখবেন, সুস্থ ত্বক এবং সুন্দর পরিবেশ – দুটোই আমাদের জন্য জরুরি।
সচেতনভাবে সানস্ক্রিন বেছে নেওয়ার মাধ্যমে আমরা একদিকে যেমন নিজেদের রক্ষা করতে পারি, তেমনই সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষার ক্ষেত্রেও অবদান রাখতে পারি।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক