শিরোনাম: মাস্টার্স জয়ের স্বপ্নে বিভোর: মানসিক পরিবর্তনের পথে এগিয়ে ররি ম্যাকিলরয়
বিশ্বের অন্যতম সেরা গল্ফার ররি ম্যাকিলরয়, যিনি দীর্ঘদিন ধরে তাঁর কেরিয়ারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম সম্পূর্ণ করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এবার মাস্টার্স টুর্নামেন্টে অংশ নিতে প্রস্তুত। এই টুর্নামেন্ট তাঁর কাছে শুধুমাত্র একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং গল্ফ ইতিহাসে নিজের নাম খোদাই করার এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।
সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, আগাস্টা ন্যাশনাল গল্ফ ক্লাবে অতীতের হতাশাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে, মানসিক পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি এই টুর্নামেন্ট জয়ের স্বপ্ন দেখছেন।
ম্যাকিলরয় মনে করেন, অতীতে এই মাঠটিতে তাঁর যে “হৃদয় ভাঙা” অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে তিনি এবার আরও শক্তিশালী হতে চান।
২০১১ সালের মাস্টার্স টুর্নামেন্টে তাঁর পারফরম্যান্স বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল, যা অনেকের মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল। তিনি জানান, এখন তিনি মানসিক দিক থেকে আরও স্থিতিশীল এবং যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।
প্রায় ১১ বছর আগে ম্যাকিলরয় তাঁর শেষ মেজর খেতাব জিতেছিলেন। এরপর থেকে তিনি বেশ কয়েকবার শীর্ষ ১০-এর মধ্যে থাকলেও, কাঙ্ক্ষিত জয় অধরাই রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, “আগে আমি নিজেকে রক্ষা করার একটা চেষ্টা করতাম, কারণ আমি মনস্তাত্ত্বিকভাবে আঘাত পেতে চাইতাম না। জীবনের অন্য অনেক ক্ষেত্রেও এমনটা হয়। মানুষ ভালোবাসতে ভয় পায়, কারণ তারা কষ্ট পেতে চায় না।”
কিন্তু এই অভিজ্ঞতাই তাঁকে নতুন পথে চলতে শিখিয়েছে।
তিনি এখন আর কোনো কিছুই আড়াল করতে চান না। বরং, নিজের দুর্বলতাগুলো প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “কয়েক বছর ধরে আমি বড় টুর্নামেন্ট জেতার সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু সবসময় সফল হইনি। তবে জীবন থেমে থাকে না। আবার নতুন করে শুরু করতে হয়। তাই আমি এখন সবকিছু উজাড় করে দিতে এবং কিছুটা দুর্বল হতেও প্রস্তুত।”
এই মুহূর্তে ম্যাকিলরয় দারুণ ফর্মে আছেন।
এই বছর তিনি পিজিএ ট্যুরে দুটি খেতাব জয় করেছেন। অনেকেই মনে করেন, এবার মাস্টার্স জেতার সবচেয়ে ভালো সুযোগ তাঁর সামনে।
তবে বাইরের চাপকে তিনি খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
তাঁর মতে, “এগুলো সবই আলোচনা, নিছক গুঞ্জন। আমার কাজ হল, এই শব্দগুলো থেকে নিজেকে দূরে রাখা এবং টুর্নামেন্টটিকে অন্য সব প্রতিযোগিতার মতোই দেখা।”
ম্যাকিলরয় তাঁর চার বছর বয়সী মেয়ে পপির একটি মজার ঘটনাও উল্লেখ করেন।
গত মাসে ‘প্লেয়ার্স চ্যাম্পিয়নশিপ’ জেতার পর পপি প্রথম বুঝতে পেরেছিল যে তাঁর বাবা একজন বিখ্যাত গল্ফার।
ম্যাকিলরয় বলেন, “পরের দিন স্কুলে যাওয়ার পর কয়েকজন বন্ধু পপিকে কিছু কথা বলেছিল। সে বাড়ি এসে আমাকে জিজ্ঞেস করল, ‘বাবা, তুমি কি বিখ্যাত?’ আমি বললাম, ‘কার সঙ্গে কথা বলছ, তার ওপর নির্ভর করে।
আগাস্টা ন্যাশনাল সম্পর্কে ম্যাকিলরয়ের ভালোবাসা সবসময়ই ছিল।
তিনি বলেন, “আমি সবসময় এই মাঠটি ভালোবেসেছি। যদি সারা জীবন একটি মাঠেই খেলার সুযোগ পাওয়া যায়, তবে এটিই আমার পছন্দ।”
তাঁর মতে, এই মাঠের ইতিহাস, এখানকার পরিবেশ—সবকিছুই অসাধারণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান