মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি নিয়ে সম্প্রতি ইলন মাস্ক এবং প্রাক্তন ট্রাম্প উপদেষ্টা পিটার নাভারোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাভারোকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন এবং তাঁর বক্তব্যকে মিথ্যা বলে অভিহিত করেছেন।
এই বিতর্কের মূল কারণ হল যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতি এবং টেসলার ব্যবসা এর উপর এর প্রভাব।
শুল্ক নীতিগুলি হল একটি দেশের আমদানি করা পণ্যের উপর ধার্য করা কর, যা সাধারণত স্থানীয় শিল্পকে রক্ষার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়।
পিটার নাভারো, যিনি একসময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা ছিলেন, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন যে টেসলা একটি ‘গাড়ি সংযোজনকারী’ প্রতিষ্ঠান, উৎপাদনকারী নয়।
তাঁর মতে, টেসলার গাড়ির অনেক যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আসে, যেমন ব্যাটারি আসে জাপান ও চীন থেকে, এবং ইলেকট্রনিক্স আসে তাইওয়ান থেকে।
নাভারোর মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য ছিল গাড়ির যন্ত্রাংশ আমেরিকাতেই তৈরি করা, যাতে দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থান বাড়ে।
জবাবে, ইলন মাস্ক নাভারোকে ‘বোকা’ এবং ‘মিথ্যাবাদী’ আখ্যা দেন।
তিনি দাবি করেন, টেসলা’র গাড়িগুলো ‘সবচেয়ে বেশি আমেরিকান-নির্মিত’। মাস্ক আরও জানান, টেসলার ‘American-Made Index’-এ শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে, যা গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরি, অ্যাসেম্বলিং এবং কর্মীর সংখ্যার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়।
যদিও মাস্ক নিজেও স্বীকার করেছেন যে শুল্কের কারণে টেসলার ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে।
মাস্কের এই মন্তব্যের আগে তিনি নাভারোর হার্ভার্ড থেকে পাওয়া ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এবং তাঁর কাজ নিয়েও সমালোচনা করেন।
মাস্ক শুল্কের বিপক্ষে তাঁর অবস্থান তুলে ধরেছেন, মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেছেন এবং ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো শুল্ক না থাকার পক্ষে মত দিয়েছেন।
হোয়াইট হাউস এই বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেন, “স্পষ্টতই, এই দুই ব্যক্তির বাণিজ্য এবং শুল্কের বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত রয়েছে। তবে আমরা তাদের এই বিতর্কে কোনো হস্তক্ষেপ করতে চাই না।”
এই ঘটনা মার্কিন বাণিজ্য নীতি এবং টেসলার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এখন দেখার বিষয়, এই বিতর্কের পরিণতি কী হয় এবং এটি কিভাবে বাণিজ্য নীতিকে প্রভাবিত করে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন