যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে অস্থিরতা: চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের শঙ্কা, বাংলাদেশের জন্য কী বার্তা?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে মঙ্গলবার দিনভর ছিল অস্থিরতা। প্রথমে বাজারে তেজিভাব দেখা গেলেও, শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণার পর তা দ্রুতই হ্রাস পায়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পরই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিশ্ব অর্থনীতিতে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, যা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
হোয়াইট হাউজ মঙ্গলবার ঘোষণা করে যে, চীন থেকে আসা সকল পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। এর ফলে, চীনের সকল পণ্যের ওপর সর্বনিম্ন ১০৪ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এই ঘোষণার পরেই শেয়ার বাজারে দরপতন শুরু হয়। ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ২৬০ পয়েন্টের বেশি কমে যায়, যা বাজারের জন্য উদ্বেগের কারণ। এস অ্যান্ড পি ৫০০ এবং নাসডাক কম্পোজিট সূচকও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই দরপতনের মূল কারণ হলো চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ আরো তীব্র হওয়ার আশঙ্কা। এই বাণিজ্য যুদ্ধ চললে, তা বিশ্ব অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের বিষয়ে সতর্ক হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্ব বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়তে পারে। চীন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার এবং অনেক বাংলাদেশি পণ্য চীন হয়ে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে রপ্তানি কমে গেলে, দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়লে, তা দেশের বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে, এখনো পর্যন্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা চলতে পারে এবং এর ফলে শুল্ক নীতিতে পরিবর্তন আসারও সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়ে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বাংলাদেশের উচিত হবে এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সম্ভাব্য খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং নতুন বাজার অনুসন্ধানে জোর দেওয়া প্রয়োজন।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং বিশ্ব বাজারের পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। সরকারের নীতিনির্ধারকদেরও দেশের অর্থনীতির সুরক্ষায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: CNN