ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো শহর, যা তার মনোমুগ্ধকর আবহাওয়ার জন্য সুপরিচিত, এখন সংস্কৃতিপ্রেমীদের কাছেও একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠছে। এখানকার প্রাণবন্ত সংস্কৃতি, শিল্পচর্চা আর স্থানীয় মানুষের উষ্ণ আতিথেয়তা—সবকিছু মিলিয়ে শহরটি যেন এক ভিন্ন জগৎ।
যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরটিতে প্রায় ১৪ লক্ষ মানুষের বসবাস। সান দিয়েগোতে রয়েছে অসংখ্য জাদুঘর, ঐতিহাসিক শিল্পকেন্দ্র এবং বিশ্বমানের পারফর্মিং আর্টস ভেন্যু।
সান দিয়েগো সিম্ফনির কথা ধরুন, যা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরনো অর্কেস্ট্রাগুলোর মধ্যে অন্যতম। শহরটির কেন্দ্রে অবস্থিত জ্যাকবস মিউজিক সেন্টারে নিয়মিত কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিভিন্ন সংস্কৃতি ও বয়সের মানুষের জন্য সঙ্গীতের আয়োজন করা হয়।
শুধু তাই নয়, শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত “দ্য রেডি শেল অ্যাট জ্যাকবস পার্ক”-এ বসে সান দিয়েগো উপসাগরের মনোরম দৃশ্যের সাথে উপভোগ করা যায় নানা ধরনের পরিবেশনা।
সান দিয়েগোর সংস্কৃতিচর্চার কেন্দ্রবিন্দু হলো বালবোয়া পার্ক। এক হাজার দুশো একর জায়গার উপর অবস্থিত এই পার্কে রয়েছে ১৮টি জাদুঘর, যা বিমান চলাচল থেকে শুরু করে বিজ্ঞান, লোকশিল্প—বিভিন্ন ধরনের শিল্পকলার প্রতি উৎসর্গীকৃত।
এছাড়াও, এখানকার বাগান আর সবুজ লনগুলোতে বসে বিশ্রাম নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে। প্রতি রোববার এখানে ৪,৭২৫টি পাইপযুক্ত স্প্রেকেলস অর্গান বাজানো হয়, যা ১৯১৪ সাল থেকে এখানে বিদ্যমান।
শিল্পকলার প্রসারে লা জোলার কনরাড প্রিবিস পারফর্মিং আর্টস সেন্টার এবং পয়েন্ট লোমার আর্টস ডিস্ট্রিক্ট, ‘লিবার্টি স্টেশন’-এর মতো স্থানগুলোর অবদান অনস্বীকার্য।
পূর্বে নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত এই স্থানটি বর্তমানে একটি প্রাণবন্ত শিল্পকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে, যেখানে শিল্পী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আনাগোনা দেখা যায়।
এখানে ৪০ একরের বেশি জায়গা জুড়ে রয়েছে একটি সুন্দর পার্ক, যেখানে হাঁটাচলার পথ, খেলার জায়গা এবং বিভিন্ন ধরনের উৎসবের আয়োজন করা হয়।
শুধু তাই নয়, সান দিয়েগোর আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে লাইভ মিউজিকের ব্যবস্থা। পেটকো পার্কের কনসার্ট থেকে শুরু করে “দ্য মিউজিক বক্স”-এর মতো লাইভ মিউজিক ভেন্যুগুলোতে সঙ্গীতপ্রেমীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়।
যারা ভালো থিয়েটার উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য এখানে রয়েছে ডাইভারশনারি থিয়েটার, ওল্ড গ্লোব থিয়েটার এবং লা জোল্লা প্লেহাউসের মতো মঞ্চ।
সান দিয়েগোর সংস্কৃতি আর ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে। এখানকার মানুষের উষ্ণ অভ্যর্থনা ও ইতিবাচক মনোভাব যেকোনো পর্যটকের কাছে শহরটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক