যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তিনি একদিকে যেমন বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও তীব্র করতে প্রস্তুত হচ্ছেন, তেমনি কয়লা শিল্পকে চাঙ্গা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এই বিষয়গুলো ছাড়াও, তার বিভিন্ন নীতি এবং সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।
জানা গেছে, বুধবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, তারা অনেক দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য চুক্তি করতে চাইছে।
তবে, চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের প্রতিশোধ নেয়, তাহলে তাদের রফতানির ওপর ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
বর্তমানে চীনের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। নতুন করে এই শুল্ক আরোপ হলে তা বেড়ে ১০৪ শতাংশে পৌঁছাবে।
বাণিজ্য যুদ্ধের এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে।
অন্যদিকে, পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ কয়লা শিল্পের পুনরুজ্জীবনের জন্য মঙ্গলবার চারটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে কার্বন নিঃসরণ বেড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি আরও বাড়বে।
এছাড়াও, ফেডারেল কর্মীদের পুনর্বহাল করার বিষয়ে একটি আদালতের রায় আটকে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
এর ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া একটি সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন আপাতত স্থগিত হয়ে গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাতে বিনিয়োগের একটি পরিকল্পনা বাতিল করারও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, যা দেশটির ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ওহাইও অঙ্গরাজ্যের মিডেলটাউন শহরেও প্রভাব পড়তে পারে।
গণমাধ্যম এবং সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়েও ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি একটি আদালত, হোয়াইট হাউসকে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এর (এপি) সাংবাদিকদের জন্য তাদের কার্যক্রম উন্মুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।
সংবাদ সংস্থাটিকে মেক্সিকো উপসাগর নিয়ে খবর প্রকাশের কারণে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।
আরেকটি খবরে জানা যায়, ফিলিস্তিনের একজন অ্যাক্টিভিস্টকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করার বিষয়ে একটি মামলার শুনানি চলছে।
অভিবাসন বিষয়ক একজন বিচারক বুধবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে বিতাড়নের স্বপক্ষে প্রমাণ দাখিলের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
যদি প্রমাণ পাওয়া না যায়, তবে সম্ভবত শুক্রবার ওই অ্যাক্টিভিস্টকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তগুলো একদিকে যেমন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব ফেলছে, তেমনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
বাণিজ্য শুল্ক বৃদ্ধি এবং কয়লা শিল্পের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার ফলে পরিবেশের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান