আলোচনায় তিন ডেমোক্রেট সেনেটরের বিদায়, কেন বাড়ছে দলবদলের হিড়িক?

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে গভীর পরিবর্তনের ইঙ্গিতস্বরূপ, তিনজন প্রভাবশালী ডেমোক্রেট সিনেটর আসন্ন নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিনেটর গ্যারি পিটার্স, যিনি মিশিগান অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত, সিনেটর টিনা স্মিথ, যিনি মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত, এবং নিউ হ্যাম্পশায়ারের সিনেটর জেন শাহীন এই তালিকাভুক্ত হয়েছেন।

তাদের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন মেরুকরণের চিত্র তুলে ধরছে, যেখানে সমঝোতার রাজনীতি কঠিন হয়ে পড়ছে।

সিনেটরদের এই অবসরের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে রাজনৈতিক বিভাজন এবং দ্বিদলীয় আলোচনার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান জটিলতা।

সিনেটর পিটার্স এক সাক্ষাৎকারে জানান, “গত কয়েক বছরে পরিস্থিতি কঠিন থেকে কঠিনতর হয়েছে।

মধ্যপন্থী অবস্থানগুলো যেন হারিয়ে যাচ্ছে।

এই মন্তব্যটি বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার একটি প্রতিচ্ছবি, যেখানে ভিন্ন মতাদর্শের মধ্যে কাজ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে।

সিনেটরদের এই প্রস্থানের ফলে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে একটি শূন্যতা সৃষ্টি হবে।

তারা এমন সময়ে বিদায় নিচ্ছেন, যখন দলটিকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে ফেডারেল সরকারের নীতিগুলোতে যে পরিবর্তন এসেছে, তার মোকাবিলা করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়া, দলের মধ্যে ট্রাম্প বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক সময় ডেমোক্রেটদের পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

সিনেটর শাহীন মনে করেন, “এখনকার সময়ে, যারা অন্য দলের সঙ্গে কাজ করে, তাদের অনেক সময় নেতিবাচক চোখে দেখা হয়।

এই প্রবণতা উভয় দলের মধ্যেকার সম্পর্ককে আরও কঠিন করে তুলছে এবং গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়নে বাধা সৃষ্টি করছে।

এই পরিস্থিতিতে, আগামী কয়েক মাসে ডেমোক্রেটদের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ বার্তা তৈরি করা এবং তাদের প্রগতিশীল ভিত্তিকে একত্রিত করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

কারণ, ২০২৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পথ কঠিন হতে পারে।

সিনেটরদের এই বিদায়ের পেছনে ব্যক্তিগত কারণও রয়েছে।

সিনেটের কর্মপরিবেশ অনেক সময় তাঁদের পরিবার থেকে দূরে থাকতে বাধ্য করে।

ঘন ঘন রাজ্যের বাইরে যাওয়া, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা এবং তহবিল সংগ্রহের মতো বিষয়গুলো তাঁদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার বলেন, “এই কাজটি কঠিন… তবে আমি মানুষের ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক চাপ বুঝি।

সিনেটের এই পরিবর্তনগুলোতে এখন পর্যন্ত যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

আলাস্কার রিপাবলিকান সিনেটর লিসা মুরকোওস্কি, যিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সিনেটর স্মিথ ও শাহীনের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের এই সিদ্ধান্তে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

তিনি মনে করেন, “আলোচনা এবং সমঝোতার মাধ্যমে ভালো নীতি তৈরি করা সম্ভব।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এই পরিবর্তন একটি গভীর উদ্বেগের বিষয়।

এর কারণ হলো, সমঝোতার রাজনীতির অভাব এবং রাজনৈতিক বিভাজন দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *