ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে উদ্বেগে নির্বাচন সুরক্ষা নেটওয়ার্ক, কর্মকর্তাদের মাঝে চরম দুশ্চিন্তা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল করার অভিযোগ উঠেছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে নির্বাচন সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা নেটওয়ার্কগুলো ভেঙে দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাজ্যের কর্মকর্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপরিহার্য, যা বিশ্বের যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থা সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বেশ কয়েকটি সংস্থাকে দুর্বল করার প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে রয়েছে সাইবার নিরাপত্তা ও অবকাঠামো নিরাপত্তা সংস্থা (CISA)। এই সংস্থাটি ফেডারেল, রাজ্য ও স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচন বিষয়ক কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করে থাকে।

সাইবার নিরাপত্তা এবং অন্যান্য হুমকি মোকাবিলায় তথ্য আদান-প্রদান ও বিশ্লেষণের কাজটিও করে এই নেটওয়ার্ক। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে সংস্থাটির কর্মীর সংখ্যা কমানো হয়েছে এবং এর কার্যক্রম সীমিত করার পরিকল্পনা চলছে।

ফেব্রুয়ারির শুরুতে CISA-র ১৩০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়। এর মধ্যে ১০ জন আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞও ছিলেন, যারা স্থানীয় ও রাজ্য নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করতেন। এছাড়া, সিভিল সার্ভিস সুরক্ষা থেকে সংস্থাটির কর্মীদের অব্যাহতি দেওয়ারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এর ফলে রাজনৈতিক কারণে তাদের চাকরিচ্যুত করারও সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে, নির্বাচনের ওপর বিদেশি প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তদন্তের জন্য গঠিত একটি বিশেষ টাস্কফোর্স ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা বিষয়ক আরেকটি টাস্কফোর্সের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি প্রধান ক্রিস্টি নোয়েম, জাতীয় তথ্য আদান-প্রদান বিষয়ক প্রকল্পের অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য ও স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তাদের সাইবার হামলা ও অন্যান্য হুমকি শনাক্ত করতে সহায়তা করা হতো।

অন্যদিকে, ট্রাম্প এমন কিছু ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছেন, যারা নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির মিথ্যা অভিযোগের পক্ষে। এর মধ্যে রয়েছেন পাম বন্ডি, ক্রিস্টি নোয়েম এবং এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেল। এসব পদক্ষেপের কারণে বিভিন্ন রাজ্যের কর্মকর্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাদের মতে, এর ফলে আগামী নির্বাচনগুলোতে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। ৪৬ জন স্টেট সেক্রেটারি এবং শীর্ষস্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তাদের একটি দ্বিদলীয় সংগঠন বিষয়টি নিয়ে হোয়াইট হাউসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তবে তাদের উদ্বেগের বিষয়ে এখনো কোনো সুস্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি।

নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচনের সময় কারচুপির ঘটনা ঘটে, যা গণতন্ত্রের প্রতি চরম আঘাতস্বরূপ। যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনা অন্যান্য দেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা।

তথ্য সূত্র: সিএনএন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *