আতঙ্কের ঢেউ! কঙ্গোতে ৫০ জলহস্তীর মর্মান্তিক মৃত্যু!

গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোর (Democratic Republic of Congo – DRC) পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানে (Virunga National Park) অন্তত ৫০টি জলহস্তী (hippopotamus) ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। পরীক্ষার পর জানা গেছে, এদের মৃত্যুর কারণ হলো অ্যানথ্রাক্স (anthrax) নামক এক মারাত্মক ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ।

জানা গেছে, মৃত জলহস্তীগুলো ইশাশা নদীতে (Ishasha River) ভেসে উঠেছে। এই নদীটি আফ্রিকার অন্যতম বৃহৎ হ্রদ, এডওয়ার্ড হ্রদে (Lake Edward) গিয়ে পড়েছে। পার্কের পরিচালক এমানুয়েল ডি মেরোড (Emmanuel De Merode) মঙ্গলবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, বন্য মহিষও (buffalo) এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতদেহগুলো নদীর আশেপাশে এবং হ্রদের পানিতে ভেসে থাকতে দেখা গেছে। কঙ্গোর নাগরিক সমাজের নেতা থমাস কাম্বালে (Thomas Kambale) জানিয়েছেন, “কাগেজি থেকে নাকিকোমা পর্যন্ত হ্রদের পানিতে ২৫টির বেশি জলহস্তীর মরদেহ ভাসছে।

ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যান বন্যপ্রাণীর এক বিশাল আবাসস্থল। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, সরীসৃপ ও স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়। একসময় শিকার ও যুদ্ধের কারণে এখানে জলহস্তীর সংখ্যা কমে গিয়েছিল। বর্তমানে, সেখানে প্রায় ১,২০০ জলহস্তী রয়েছে। এই অবস্থায়, এই ধরনের ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের কারণ।

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা মৃতদেহগুলো সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে এবং সেগুলোকে পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে দুর্গম এলাকা এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। ডি মেরোড জানান, “আমরা রোগটি আরও ছড়িয়ে পড়া কমাতে মৃতদেহগুলো কস্টিক সোডা দিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করছি।

এদিকে, কঙ্গোর প্রকৃতি সংরক্ষণ ইনস্টিটিউট (Congolese Institute for Nature Conservation) স্থানীয় বাসিন্দাদের ওই এলাকার বন্যপ্রাণী এড়িয়ে চলতে এবং খাবার পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দিয়েছে। অ্যানথ্রাক্স সাধারণত মাটি থেকে সৃষ্ট একটি রোগ। আক্রান্ত প্রাণী দূষিত মাটি, গাছপালা বা জল থেকে রোগের জীবাণু গ্রহণ করে।

উল্লেখ্য, ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যান একটি বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, যেখানে গভীর বনভূমি, হিমবাহ এবং আগ্নেয়গিরি রয়েছে। এটি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সংরক্ষিত এলাকা, যেখানে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণীর বসবাস।

তথ্য সূত্র: সিএনএন (CNN)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *