কলম্বিয়ার সান্তা মার্তায়, স্যুটকেসের ভেতর থেকে এক প্রাক্তন লন্ডন বিজ্ঞানীর খণ্ডিত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত ৪২ বছর বয়সী আলেসান্দ্রো কোয়াত্তি, যিনি লন্ডনের রয়েল সোসাইটি অফ বায়োলজিতে (আরএসবি) কাজ করতেন, সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকায় গবেষণা ও ভ্রমণে ছিলেন।
খবর সূত্রে জানা গেছে, ইতালীয় এই নাগরিকের মরদেহ উদ্ধারের পর, সেখানকার মেয়র কার্লোস পিনেডো কুয়েলো হত্যাকারীদের ধরিয়ে দিতে ৯,০০০ পাউন্ড (প্রায় ১৩ লক্ষ টাকার সমান) পুরস্কার ঘোষণা করেছেন।
সান্তা মার্তার মেয়র এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এই জঘন্য অপরাধের বিচার হবেই। অপরাধীদের জানা উচিত, সান্তা মার্তায় অপরাধের কোনো স্থান নেই। আমরা তাদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনব।”
আলেসান্দ্রো কোয়াত্তি আট বছর ধরে লন্ডনের আরএসবি-তে কর্মরত ছিলেন। তিনি মূলত জীববিজ্ঞানের ওপর গবেষণা করতেন এবং বিজ্ঞান নীতি বিষয়ক একজন কর্মকর্তা হিসেবেও কাজ করেছেন।
২০১৬ সালে তিনি সিনিয়র সায়েন্স পলিসি অফিসার পদে উন্নীত হন। কর্মজীবনের শুরুতে, কোয়াত্তি যুক্তরাজ্যের জেনেটিক প্রযুক্তি বিষয়ক নিয়ন্ত্রণের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য ২০২২ সালের জুনে পার্লামেন্টে আরএসবি প্রতিনিধিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
পরে তিনি ইকুয়েডরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার জন্য এবং দক্ষিণ আমেরিকা ভ্রমণে বের হন।
আরএসবি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোয়াত্তি ছিলেন একজন “উদ্যোগী ও নিবেদিতপ্রাণ বিজ্ঞানী।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আলে ছিলেন হাসিখুশি, উষ্ণ হৃদয়ের ও বুদ্ধিমান। তিনি সবার কাছে প্রিয় ছিলেন এবং তাকে সবাই খুব মিস করবেন।”
কোয়াত্তি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাজের প্রতি ভালোবাসার কথা প্রায়ই উল্লেখ করতেন। লিঙ্কডইন-এ তিনি লিখেছিলেন, তিনি “বিশেষ করে প্রাণী এবং জৈব চিকিৎসা ক্ষেত্রে নৈতিক গবেষণা এবং উদ্ভাবন বিষয়ক বিষয়গুলোর ওপর মনোযোগ দেন।”
সান্তা মার্তার মেয়র অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোয়াত্তি কলম্বিয়ার জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র মিনকা ভ্রমণে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। মিনকা তার অর্গানিক কফি এবং বিভিন্ন পাখির জন্য সুপরিচিত।
তিনি স্থানীয় প্রাণীদের ওপরও গবেষণা করছিলেন বলে জানা গেছে।
এই ঘটনার তদন্ত চলছে এবং স্থানীয় পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান