মার্কিন আধিপত্য সত্ত্বেও বিশ্ব অর্থনীতিতে ট্রাম্পের আঘাত!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি বিশ্ব অর্থনীতিতে এক নতুন অস্থিরতা তৈরি করেছে। বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে তিনি বিশ্ব অর্থনীতির চিরাচরিত কাঠামোতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন, যা নিয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলোতেও ফাটল ধরতে পারে।

ট্রাম্পের এই বাণিজ্য নীতির মূল ভিত্তি হলো, অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে প্রতারণা করছে। তিনি মনে করেন, বিদেশি ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক ও ব্যবসার ক্ষতি করছে।

এই ধারণার বশবর্তী হয়ে তিনি বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক বসিয়েছেন। এর ফলস্বরূপ, গত কয়েক মাসে বিশ্ব বাজারে অস্থিরতা বেড়েছে এবং বিনিয়োগকারীরাও মার্কিন শেয়ার বাজার থেকে দূরে থাকতে শুরু করেছেন।

তবে, ট্রাম্পের এই নীতির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন অনেক অর্থনীতিবিদ। তাদের মতে, বাণিজ্য ঘাটতি কোনো দেশের দুর্বলতার লক্ষণ নয়।

বরং, এটি একটি দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির ফল। তারা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের বেশি খরচ করার প্রবণতা এবং সঞ্চয়ের অভাবের কারণেই বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। এর ফলে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের রপ্তানি আয়ের একটা অংশ যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করে, যা দেশটির অর্থনীতিকে সাহায্য করে।

যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পণ্য ও পরিষেবা রপ্তানিকারক দেশ। ২০২৩ সালে দেশটি ৩.১ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য ও পরিষেবা রপ্তানি করেছে।

যদিও বাণিজ্য ঘাটতি একটি উদ্বেগের বিষয়, তবুও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপগুলো অর্থনীতির জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই নীতি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (World Trade Organization – WTO)-এর নিয়ম ভেঙে দিতে পারে এবং এর ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হতে পারে।

এর সরাসরি প্রভাব এখনো বাংলাদেশে দেখা না গেলেও, বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা দেখা দিলে বাংলাদেশের রপ্তানি কমে যেতে পারে এবং আমদানি খরচও বেড়ে যেতে পারে।

বস্তুত, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই নীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে।

তবে, এর প্রভাব যে বিশ্বজুড়ে অনুভূত হবে, তা বলাই বাহুল্য।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *