ডেল্টা এয়ারলাইন্স ২০২৩ সালের জন্য তাদের আর্থিক পূর্বাভাস প্রত্যাহার করে নিয়েছে, কারণ বিশ্ব বাণিজ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এর ফলে ব্যবসা এবং ভ্রমণের ক্ষেত্রে চাহিদা কমে গেছে। সম্প্রতি মার্কিন বাণিজ্য নীতির কারণে সৃষ্ট উদ্বেগের ফলস্বরূপ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এড বাস্টিয়ান বুধবার এক বিবৃতিতে জানান, বিশ্ব বাণিজ্যের আশেপাশে ব্যাপক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে প্রবৃদ্ধি অনেকটাই থমকে গেছে। তিনি আরও বলেন, “এই ধীরগতির প্রবৃদ্ধির পরিবেশে আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকা বিষয়গুলোর ওপর মনোযোগ দিয়ে মার্জিন ও নগদ প্রবাহ রক্ষার চেষ্টা করছি।
এর মধ্যে রয়েছে—বছরের দ্বিতীয়ার্ধে পরিকল্পিত সক্ষমতা বৃদ্ধি কমানো এবং একইসঙ্গে ব্যয় ও মূলধন ব্যয় সক্রিয়ভাবে পরিচালনা করা।”
প্রথম প্রান্তিকে, ডেল্টা ২৪০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা শেয়ার প্রতি ৩৭ সেন্ট। যেখানে এক বছর আগে তাদের আয় ছিল ৩৭ মিলিয়ন ডলার, বা শেয়ার প্রতি ৬ সেন্ট। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল, এই আয় ৪০ সেন্ট হতে পারে।
এই বছর, শেয়ার বাজারে ডেল্টা এয়ারলাইন্সের শেয়ারের দর ৪১ শতাংশ কমেছে, যা আমেরিকান এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের তুলনায় কিছুটা ভালো অবস্থানে রয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে পরিচালন আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪.০৪ বিলিয়ন ডলারে, যেখানে ওয়াল স্ট্রিটের অনুমান ছিল ১৩.৮১ বিলিয়ন ডলার।
জ্বালানির গড় মূল্য প্রতি গ্যালনে ২.৭৯ ডলার থেকে কমে ২.৪৭ ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত মাসে, ডেল্টা প্রথম প্রান্তিকের আয় এবং রাজস্বের পূর্বাভাস কমিয়েছিল।
কারণ, অর্থনীতির অনিশ্চয়তা বাড়ার কারণে ভোক্তা ও কর্পোরেট উভয় পর্যায়েই আস্থা কমে গিয়েছিল, যা অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল করে দেয়।
জানুয়ারিতে, ডেল্টা চতুর্থ প্রান্তিকের ফলাফল প্রকাশ করে, যা ওয়াল স্ট্রিটের মুনাফা এবং রাজস্বের অনুমানকে ছাড়িয়ে যায়। কারণ, ছুটির মৌসুমে তাদের ভালো চাহিদা ছিল। তবে এর পর থেকে পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে।
ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ভোক্তা এবং ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতের বিষয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন। ফলে তারা তাদের খরচ কমাচ্ছে, যার মধ্যে ভ্রমণও অন্তর্ভুক্ত।
বাস্টিয়ান জানান, ডেল্টা আশা করছে জুনের প্রান্তিকে তাদের মুনাফা ১.৫ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার হবে। তবে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে তারা পুরো বছরের জন্য তাদের পূর্বাভাস সংশোধন করবে না। এর আগে, কোম্পানিটি আশা করেছিল, ২০২৫ সালে তাদের শেয়ার প্রতি আয় ৭.৩৫ ডলারের বেশি এবং ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি ফ্রি ক্যাশ ফ্লো হবে।
ডেল্টার প্রেসিডেন্ট গ্লেন হাউয়েনস্টাইন বলেন, “বছরের শুরুতে আমরা যেমনটা আশা করেছিলাম, ২০২৩ সাল তেমনভাবে যাচ্ছে না। ফলে আমরা বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছি এবং একইসঙ্গে আমাদের দীর্ঘমেয়াদী কৌশল ধরে রাখছি।”
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস