ঢাকা, [আজকের তারিখ] – পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা একটি গ্রহাণু, যা সম্ভবত চাঁদের বুকে আঘাত হানতে পারে, বিজ্ঞানীরা তার নতুন চিত্র প্রকাশ করেছেন। এই গ্রহাণুটির আকৃতি অনেকটা ‘হকি খেলার চাকতির’ মতো, যা দ্রুত গতিতে ঘুরছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কার মহাকাশ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান আরও বাড়াতে সাহায্য করবে এবং ভবিষ্যতে পৃথিবীর জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী গ্রহাণু শনাক্ত করতে সহায়তা করবে।
নতুন পর্যবেক্ষণে জানা গেছে, ২০২৩ YR4 নামের এই গ্রহাণুটি দেখতে আলু বা অন্য কোনও পরিচিত বস্তুর মতো নয়, বরং এটি একটি চ্যাপ্টা চাকতির মতো, যা খুবই দ্রুতগতিতে ঘুরছে। বিজ্ঞানীরা চিলির ‘জেমিনি সাউথ অবজারভেটরি’ ব্যবহার করে এর ত্রিমাত্রিক চিত্র তৈরি করেছেন।
এর আগে ধারণা করা হয়েছিল, ২০৩২ সালে এই গ্রহাণুটি পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা খাবে, তবে বর্তমানে সেই সম্ভাবনা প্রায় শূন্যের কোঠায়।
তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, এর পরিবর্তে চাঁদের বুকে আঘাত হানার সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও নাসা (NASA)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এমনটা ঘটলেও চাঁদের কক্ষপথে কোনো পরিবর্তন হবে না।
এই গ্রহাণুটির আকার প্রায় ৬0 মিটার বা ২০০ ফুটের মতো। এটি প্রতি ২০ মিনিটে একবার নিজের অক্ষের চারপাশে ঘোরে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এটি মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যে অবস্থিত গ্রহাণু জগৎ থেকে এসেছে এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ‘সিলিকেট’ বিদ্যমান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের পর্যবেক্ষণ ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে মহাকাশে থাকা অন্য কোনো গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে আসলে, তা শনাক্ত করা এবং সে বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
এই গ্রহাণুটি প্রতি চার বছর পর পৃথিবীর কাছাকাছি আসে এবং বিজ্ঞানীরা এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ‘ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ’-এর মাধ্যমে এর আরও বিস্তারিত চিত্র পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই গবেষণা আমাদের গ্রহকে রক্ষা করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা কোনো গ্রহাণু থেকে মানবজাতিকে বাঁচাতে এই ধরনের গবেষণা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস