ওয়ালমার্ট: শুল্কের জেরে মুনাফা নিয়ে অনিশ্চয়তা!

বিশ্বের বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্ট, শুল্কের কারণে তাদের মুনাফা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। চীন, ভিয়েতনাম ও অন্যান্য দেশ থেকে পণ্য আমদানির ওপর শুল্কের প্রভাব কেমন হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয় বলেই চলতি কোয়ার্টারের জন্য তারা তাদের আর্থিক পূর্বাভাস প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, শুল্কের কারণে তারা দাম কমানোর জন্য বিনিয়োগ করতে চায়, তাই প্রথম ত্রৈমাসিকের পরিচালন মুনাফা নিয়ে তাদের দ্বিধা রয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শনিবার সব দেশের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এরপর তিনি অনেক দেশের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছেন, যার পরিমাণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চীন। দেশটির ওপর বর্তমানে ১০৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হচ্ছে।

তবে ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, এই কোয়ার্টারে তাদের বিক্রি ৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তারা পুরো বছরের বিক্রি এবং মুনাফার পূর্বাভাস বহাল রেখেছে।

ওয়ালমার্টের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা শুল্ক এবং সম্ভাব্য মন্দা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আত্মবিশ্বাসী। ওয়ালমার্টের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জন ডেভিড রেইনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ইতিহাস সাক্ষী আছে, অনিশ্চয়তার এই সময়ে ওয়ালমার্ট আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছে।”

বুধবার ওয়ালমার্টের শেয়ারের দাম ৩ শতাংশ বেড়েছে, যা ইঙ্গিত করে যে বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, অন্যান্য কোম্পানির তুলনায় ওয়ালমার্ট শুল্কের চাপ ভালোভাবে সামলাতে পারবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ওয়ালমার্ট তাদের বিশাল আকার এবং সরবরাহ ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য পণ্যের দাম কম রাখতে পারবে, যদিও শুল্কের কারণে তাদের খরচ বাড়ছে। এর ফলে ওয়ালমার্ট তার প্রতিযোগীদের থেকে বাজারের অংশীদারিত্ব বাড়াতে পারে।

এভারকোর আইএসআই-এর বিশ্লেষক গ্রেগ মেলিচ এক বিবৃতিতে বলেছেন, “অনিশ্চয়তার এই সময়ে ওয়ালমার্ট তার স্কেল, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছে।”

তিনি আরও বলেন, “যদিও ওয়ালমার্ট চাপের বাইরে নয়, তবে অস্থিরতা ভালোভাবে সামাল দিতে তারা অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। একটি অস্থির ভোক্তা ও ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে কোম্পানিটি ভালো অবস্থানে রয়েছে।”

এই পরিস্থিতিতে, বিশ্বজুড়ে শুল্ক নীতির কারণে বিভিন্ন পণ্যের দামের পরিবর্তন হতে পারে। ওয়ালমার্টের এই পদক্ষেপের কারণে, বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর প্রভাব কেমন হবে, সেদিকে এখন অনেকের নজর।

একই ধরনের শুল্ক নীতি ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের দামের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *